ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌর এলাকার খয়েরতলার যুবক বিল্লাল হোসেন। পিতা আলী আকবার মুন্সির অভাবের সংসারে ৭ম শ্রেণী পাশের পর আর লেখাপড়া করতে পারেনি। কিশোর বয়সেই বিদ্যুতের কাজ শিখে যোগ দিয়েছিলাম কালীগঞ্জের বিদ্যুৎ অফিসের ক্যাজুয়াল শ্রমিক হিসেবে। প্রায় দু’বছর কাজ করেও আসতো না বেতন। শহরে গ্রাহকের লাইন মেরামত কওে যে টাকা পেত তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলতো। কিন্তু কর্মকর্তার দুর্ব্যবহার আর অবহেলায় দেড় বছর আগে কাজ বন্ধ করে দেন। সে ভাবতে থাকে বিদ্যুৎ নিয়েই জীবনে এমন কিছু করবো যা দিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভুমিকা রাখবে। এরপর দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রম করে প্রযুক্তিতে আজ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছে। কোন প্রকার জ্বালানী ছাড়াই নিজের প্রযুিক্ততে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে চলছে ইজিবাইক চার্জ দেয়ার কাজ।
সে জানান, ১টি চার্জ কন্ট্রলার, ২টি রাডার, ১টি ডিসি মটর, ১টি ডায়নামা, কয়েকটি পুলির সাথে সংযোগ দেয়া হয়েছে নিজের তৈরী ২টি সার্কিট। প্রথমে ব্যাটারী দিয়ে মটরটি চালু করার সাথে সাথে ওই সংযোগ অটো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর পুলিতে বেল্ট ঘুরতে থাকে। এখান থেকেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। সেই উৎপাদনকৃত বিদ্যুতেই ইজিবাইকের চার্জ দেয়ার কাজ ছলছে। কোন রকমের জ্বালানী ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। কম খরচে বাসা বাড়িতেও ব্যবহার যোগ্য। তার দাবি এ প্রযুক্তিই পারে বিদ্যুতের অভাব মেটাতে। সে আরো জানায়, সফল হতে সরঞ্জামাদী কিনতে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়েছে। যত কষ্টই হোক দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পর আজ সফলতা এসেছে। এখন শহরের কলাহাটা মোড়ে আয়না ইজিবাইক চার্জার হাউজ নামের প্রতিষ্ঠান করেছেন।
শহরের ফয়লা মাষ্টারপাড়ার ইজিবাইক চালক সুজিত দাস জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন রাতে বিল্লালের উৎপাদিত বিদ্যুতে বাইক চার্জ দিয়ে সারাদিন ভাড়ায় ইজবাইক চালাচ্ছেন। এতে চার্জের কোন ঘাটতি হচ্ছেনা। তার এ প্রযুক্তিতে উৎপন্ন বিদ্যুতে চার্জ দিতে খরচ কম হচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্বরত (ডি.জি.এম) ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহম্মদ আব্দুর রব জানান, প্রতিভাবান যুবক নিজের প্রযুক্তিতে জ্বালানী ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে কাজে লাগাচ্ছে এটা শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। যা শুনেছি তার সত্যতা রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিভাবান এ ছেলেটি যে মেধা খাঁটিয়ে এ প্রযুক্তি তৈরী করেছে সেটা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভুমিকা রাখতে পারে।