ছবি: সংগৃহীত
দেশের সিনেমা হলসহ সবধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় সিনেমা 'ফারাজ' মুক্তি ও প্রচার-প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সিনেমা হলসহ সবধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় সিনেমা 'ফারাজ' মুক্তি না দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হলি আর্টিসানের ঘটনায় নিহত অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ রিটটি দায়ের করেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিসানের জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত ভারতীয় সিনেমা 'ফারাজ' বাংলাদেশের মুক্তির প্রশ্নে রিট আবেদনে রুল জারিরও আরজি জানানো হয়। রিট আবেদনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্নিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
রিটকারীর আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ফারাজ সিনেমা বাংলাদেশের কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ কোথাও প্রদর্শন করা না হয় সেজন্য রিট দায়ের করা হয়েছে। এই সিনেমায় যা চিত্রায়িত করা হয়েছে, সেখানে দেখানো হয়েছে দুইজন জঙ্গি কথা বলছে, তার মধ্যে একজনের সঙ্গে অবিন্তার সম্পর্ক ছিল বা আছে। তার পোশাক পরিচ্ছদ এমনভাবে দেখানো হয়েছে যা আমাদের সভ্য সমাজে শিক্ষিত পরিবার কখনও এসব পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করে না। এই সিনেমায় মেয়েটাকে চারিত্রিকভাবে অবনতি করা হয়েছে। এমনকি পুলিশকে ব্যর্থ দেখানো হয়েছে। যা একটি সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। এসব কারণে বাংলাদেশের কোনো পল্গ্যাটফর্মে আসা উচিত নয়। তাই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়েছিল। হাইকোর্ট রিটের শুনানি নিয়ে ফারাজ সিনেমা ওটিটি, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনসহ কোনো পল্গ্যাটফর্মে মুক্তি দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ফারাজ আইয়াজ হোসেন ও অবিন্তা কবিরসহ ২০ জন। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যদের এই হামলায় গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গির মৃত্যু হয়।
এই জঙ্গি হামলা নিয়ে বানানো হয়েছে বলিউড সিনেমা ফারাজ। হংসল মেহতা পরিচালিত টি-সিরিজের সিনেমাটি গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভারতে মুক্তি পেয়েছে। 'ফারাজ' এর প্রযোজক বলিউড নির্মাতা অনুভব সিনহা।
গত ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর শাহজাদপুরে অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে একই দাবি জানিয়েছিলেন রুবা আহমেদ। তিনি বলেন, 'ফারাজ সিনেমাটি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ণ করবে। সিনেমাটির নির্মাতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ ঘটনায় তাঁরা সহমর্মিতাও প্রকাশ করেননি। আইনি নোটিশ পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।' পরে এ বিষয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
এনএনবিডি ডেস্ক :
মন্তব্য করুন