নাম - ছবি : সংগ্রহীত
রাজপথে আন্দোলন ছাড়া সামনে কোনো উপায় দেখছে না বিএনপি। দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের একটি অংশ মনে করছে, পরিস্থিতি যাই হোক আগামী জাতীয় নির্বাচনেও অংশ না নিলে দল বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে বিএনপি।
বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানায়, আগামী বছর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বর্ষপূর্তি, খালেদা জিয়ার মামলার রায়, ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি—এ বিষয়গুলো সামনে রেখে বছরজুড়ে মাঠে থাকতে চায় বিএনপি। খালেদা জিয়াও দলের নেতা-কর্মীদের আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। এরই মধ্যে আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দলের ৭৭টি সাংগঠনিক জেলায় সফর শুরু করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএনপির নেতারা মনে করছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে। এর পরবর্তী পরিস্থিতি কী হয়, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। এ সময় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের তরফ থেকে দল ও জোট ভাঙার চেষ্টা হতে পারে।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র জানায়, মামলার রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হলে তা আইনি ও রাজনৈতিক দুভাবেই মোকাবিলা করা হবে। তবে কী ধরনের কর্মসূচি আসবে, তা এখনো চূড়ান্ত নয়। রায় ঘোষণার তারিখ দেওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। আপাতত নির্দেশনা হচ্ছে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হওয়ার দিন নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ সংবাদকর্মীকে বলেন, প্রমাণের ভিত্তিতে মামলার রায় হলে খালেদা জিয়া বেকসুর খালাস পাবেন। তাঁদের সন্দেহ, সরকার রায় প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে।
রায় বিপক্ষে গেলে বিএনপি কোনো কর্মসূচিতে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মওদুদ আহমদ বলেন, এত আগেভাগে এটি বলা যাবে না।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, এখন সরকার যে অবস্থানে তাতে দাবি আদায় করা মোটেও সহজ হবে না। খালেদা জিয়ার মামলার রায় পরবর্তী সময়ে বিএনপির জন্য আরও কঠিন সময় আসতে পারে। দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানেরও দেশে ফেরার আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় দলের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, আন্দোলন ছাড়া সামনে কোনো পথ নেই। তবে আন্দোলনের বিষয়ে দলটির কর্মপরিকল্পনা বা পথনকশা এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি।
এনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ গনমাধ্যমকর্মীকে বলেন, বিএনপি সমঝোতার কথা বলছে। কিন্তু মনে হয় না সরকার সমঝোতায় আসবে। এখন সামনে আন্দোলন ছাড়া বিএনপির উপায় নেই। বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির প্রস্তাব আছে। এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
বিএনপির সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিন ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে বিএনপি। এরপর থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচিতে থাকতে চায় দলটি। সভা, সমাবেশ, বিভাগীয় সফরের মতো কর্মসূচি পালন করা হতে পারে। তবে এবার টানা হরতাল-অবরোধ বা জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো কর্মসূচিতে যেতে চায় না বিএনপি। আর আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে হতে পারে চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এ সময় নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যস্ততা থাকবে। বছরের শেষ দিকে পরিস্থিতি বুঝে বড় কর্মসূচির দিকে যাওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সংবাদকর্মীকে বলেন, আগামী বছর হবে গণতন্ত্রের বছর। ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার বছর। তাঁর দাবি, ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিএনপির শক্তিশালী নেতৃত্বে জনগণ কঠোর অবস্থান নেবে।
এনএনবিডি ডেস্ক
মন্তব্য করুন