আ’লীগকে তিনবার ক্ষমতায় আনার বিনিময়ে কিছুই পাইনি: এরশাদ
নাম - ছবি : সংগ্রহীত
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ তিনবার আমাদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসেছে। বিনিময়ে কিছুই পাইনি। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বড় ফ্যাক্টর হবে। জাতীয় পার্টি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।
সোমবার দুপুরে দলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তৃতা করেন কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, এসএম ফয়সল চিশতী, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা জহিরুল আলম রুবেল, নাসির উদ্দিন মামুন, একেএম আসরাফুজ্জামান খান প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে এক বর্ণাঢ্য র্যালীর নেতৃত্ব দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বেলা একটায় র্যালিটি ইঞ্জিনির্য়াস ইনস্টিটিউট এর সামনে থেকে শুরু হয়ে মৎস ভবন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড়, বিজয় নগর হয়ে কাকরাইলের পার্টি অফিসে এসে শেষ হয়। এ র্যালির নাম করে রাজধানীতে ব্যাপক শোডাউন করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। র্যালিতে অংশ নেয়ার জন্য সকাল থেকেই রাজধানীর প্রায় সব থানা ও ওয়ার্ড থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে ইঞ্জিনির্য়াস ইনস্টিটিউটের সামনে।
আনুষ্ঠানিক ভাবে র্যালি শুরু হওয়ার আগেই ইঞ্জিনির্য়াস ইনস্টিটিউটের বাইরের অংশ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা-৪ আসনের এমপি ও ঢাকা দক্ষিণ জাপার সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর কদমতলি থানা জাতীয় পার্টির চার থেকে পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর একটি বিশাল মিছিল মৎস্য ভবনের সামনে আসলে পুরো সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নেতাকর্মীদের হাতে লাঙ্গল, এরশাদ, রওশন ও বাবলার বিশাল আকৃতির ছবি, ব্যানার ফেস্টুন, ব্যান্ড পার্টির তালে তালে নান্দনিক সাজে সজ্জিত বাবলার এ মিছিল অনুষ্ঠান স্থলে আসার সাথে সাথে পুরো এলাকা উৎসব মুখর হয়ে উঠে।
এ মিছিলের নেতৃত্ব দেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সুজন দে, শেখ মাসুক রহমান, কাওসার আহমেদ ও ইব্রাহিম মোল্লা। আবু হোসেন বাবলার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপির অনুসারী নেতাকর্মীরাও বিশাল মিছিল নিয়ে র্যালিতে অংশ নেন। এছাড়া র্যালিতে জাতীয় ছাত্র সমাজ, জাতীয় যুব সংহতির ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, কৃষক পার্টি, মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
র্যালির আগে আলোচনা সভায় এরশাদ বলেন, ১৯৯৬ সালে বিএনপির দেয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে তারা আমার দলের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দিয়ে দল ভাঙ্গালেন, আমাদের ১৪ জন এমপিকে কিনে নিলেন। আমাকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানাসহ নির্বাচনে অযোগ্য করা হলো। ২০০৮ সালে মহাজোট করা হলো। কথা ছিল ৪৮টি আসন দিবে, কিন্তু দেয়া হলো মাত্র ৩৩টি। জয়ী হলাম ২৯টিতে। বিএনপি পেল ৩০টি। আমাদের কাছ থেকে যদি সেই ১৭টি আসন কেড়ে না নিত তাহলে আমরা তখনই প্রধান বিরোধীদল হই। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা হতে দিলো না। আর ২০১৪ সালে জাপা যদি নির্বাচনে না যেত তাহলে হয়তো বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো।
স্টাফ রিপোর্টার:
মন্তব্য করুন