ইরানে মাঠে নামল হাজার হাজার সরকার সমর্থক!
নাম - ছবি : সংগ্রহীত
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারি আর নিত্যদিনের নানা অসন্তোষ নিয়ে টানা ছয় দিন সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই এবার মাঠে নামল হাজার হাজার সরকার-সমর্থক।
সেই সমাবেশ থেকে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আলি জাফারি ঘোষণা দিয়েছেন, ‘অস্থিরতার এখানেই শেষ। আজ আমরা এখানে ঘোষণা করছি, দেশদ্রোহিতার এখানেই শেষ।’
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ২২ জনের প্রাণহানির খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্স। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৩০ জনকে। যাদের মধ্যে সাড়ে ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজধানী তেহরান ও পাশের আরেক শহর থেকে।
বুধবার সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ১০টি শহরে নেমে আসে সরকার-সমর্থকরা। সমর্থকদের হাতে ছিল দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ও সরকারপ্রধানের ছবি। তাদের ইসলামী বিপ্লবের পক্ষে স্লোগান দিতে এক ভিডিওতে দেখা যায়।
রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আলি জাফারি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশই দেশদ্রোহিতার সঙ্গে যুক্ত। তারা প্রতিবিপ্লবীদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এর মধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাশহাদ শহরে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। সেখানে ‘কয়েক হাজার’ বিক্ষোভকারী অংশ নেয় বলে জানিয়েছে সরকারবিরোধী কয়েকটি দল। পরদিন রাজধানী তেহরান, কারমানশাহ ও মাশহাদ শহরে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৯ সালের পর একে সবচেয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ বলে মনে করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে একই রকমের এক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ইরান সরকার কঠোরভাবে দমন করেছিল।
জনজীবনের সংকট নিয়ে শুরু হওয়া প্রতিবাদ বিক্ষোভ রাজনৈতিক দিকে মোড় নেওয়ার পেছনে ইরানের ‘শত্রুদের’ হাত রয়েছে অভিযোগ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। আয়াতুল্লাহ আল খামেনি বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানকে অস্থির করে তুলতে সাম্প্রতিককালে তার শত্রুরা অর্থ, অস্ত্র, রাজনীতি ও বুদ্ধিসহ নানাবিধ জিনিস নিয়ে মাঠে নেমেছে।
যদিও আয়াতুল্লাহ খামেনি তাঁর বক্তব্যে কারো নাম উল্লেখ করেননি, তবে ইরানের সুপ্রিম কাউন্সিলের (প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ ফোরাম) সচিব আলি শামসখানি বলেছেন, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আসলে ‘শত্রু’ বলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য আর সৌদি আরবকেই বুঝিয়েছেন। তারাই এই বিক্ষোভ নিয়ে খেলছে।
ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমস জানায়, চলতি বছরে ইরানের মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ২০১৬ সালে দেশটিতে বেকারত্বের হার ১২ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যা বিগত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মন্তব্য করুন