ছবি-সংগৃহীত
ইসলামী ব্যাংককে রক্ষা এবং আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে শেয়ারহোল্ডার এবং গ্রাহকদের মানববন্ধনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে দুই সাংবাদিকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকার অতিথি শিল্পগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, মানববন্ধন শুরুর পরই হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের সামনেই অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করে। হামলাকারীদের অধিকাংশই কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা। হামলার সময় তারা স্লোগান দেন, কামরাঙ্গীরচরের মাটি মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি, এখানে কোনো দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের ঠাঁই নেই।
তারা জানান, আমাদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা প্রেস ক্লাবের সামনে। কিন্তু ওখানে আগে থেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অবস্থান ছিল। এজন্য আমরা উদীচী ভবনের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করি। কিন্তু মানববন্ধন শুরু হওয়ার পরপরই আমাদের ওপরে হামলা করা হয়। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের অনিয়ম নিয়ে আমাদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। আমরা শেয়ারহোল্ডার। আমরা চাই এ ব্যাংকটি বেঁচে থাকুক, সুন্দরভাবে থাকুক, কোনো অনিয়ম চাই না।
তারা আরও জানান, প্রশাসনের বাধা ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার কারণে সকল অতিথি মানববন্ধনে এসে উপস্থিত হতে পারেননি। মানববন্ধন চলাকালে ছাত্রলীগ ব্যানার এবং ফেস্টুন ছিনিয়ে নেয়। পরে সামনে থেকে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালায়।
হামলায় শিকার মানবজমিন প্রতিবেদক আব্দুল্লা আল মারুফ বলেন, প্রেস ক্লাব এলাকায় আমরা নিউজ কাভার করতে আসি। এসময় ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আমরা মানববন্ধনের নিউজ কাভার করার জন্য দাঁড়ালে মুহূর্তে কয়েকশো ছেলে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা শুরু করে। আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরেও আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এসময় তারা আমার দুটি মোবাইলফোন, মানিব্যাগ, আইডি কার্ড ও সঙ্গে থাকা আরেকটি ব্যাগ নিয়ে যায়।
ইত্তেফাকের প্রতিবেদক হাসিব প্রান্থ বলেন, আমার আইফোন ইলেভেন প্রো, মানিব্যাগের ১০ হাজার ৮০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পুলিশের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আবদুল লতিফ মাসুম, সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজ) সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, ডা: ফখরুদ্দিন মানিক, ড. আবদুল মান্নান, শ্রমিক নেতা আবদুস সালাম, আতাউর রহমান সরকার, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ চিন্তক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার। আরো অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকিব নসরুল্লাহ, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজ) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজ) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, কবি হাসান হাফিজ, ড. মোয়াজ্জম হোসেন, ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিনিধি:
মন্তব্য করুন