• , |
  • ঢাকা, বাংলাদেশ ।
সর্বশেষ নিউজ
* ঢাবির রাজনীতিবিষয়ক কমিটির কার্যক্রম শুরু * ফার্মগেটে মানসী প্লাজায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট * লাইসেন্সের দাবিতে রবিবার বিক্ষোভ করবে রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইক শ্রমিকরা * অক্টোবরে সড়কে ঝরেছে ৪৭৫ প্রাণ * এক বছরের মধ্যে ৬১.১% মানুষ নির্বাচন চান, সব সংস্কার শেষে ৬৫.৯%: জরিপ * চীনা দূতাবাসের আউটস্ট্যান্ডিং প্রমোশনাল পার্টনার অ্যাওয়ার্ড পেল অ্যাবকা * রোববার ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় * বাংলাদেশের জার্সিতে হামজার খেলা নিয়ে শঙ্কা * ঝাড়খণ্ডে জনমুক্তি-কংগ্রেস, মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের জয় * গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এক প্রতিবন্ধী শহীদ এখন আশার আলো

news

নাম - ছবি : সংগ্রহীত


দু’টি কারণে গাজা উপত্যকায় বেশ পরিচিত ছিলেন ইব্রাহিম আবু থুরাইয়া। একটি তার ব্যতিক্রমী পদ্ধতিতে গাড়ি ধোয়া, অন্যটি ইসরাইলি আগ্রাসনবিরোধী প্রতিবাদের অগ্রসেনা। ২০০৮ সালে ইসরাইলি বিমান হামলায় ২৯ বছর বয়সী থুরাইয়া তার দু’টি পা হারিয়েছেন। তবে এতে তিনি দমে যাননি এতটুকুও। ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তুশিবিরে বাস করা এই যুবক কারো ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেই করতেন জীবিকার ব্যবস্থা। আর আগের চেয়েও অনেক বেশি উদ্যম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তেন ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভগুলোতে।

কিন্তু গত শুক্রবার ইসরাইলি সেনাদের বুলেট কেড়ে নেয় এই সাহসী যুবকের জীবন। হুইল চেয়ার নিয়েই তিনি সেদিন জেরুসালেমের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন, কিন্তু দখলদার সেনাদের বুলেট বাঁচতে দেয়নি এই পঙ্গু মানুষটিকেও। ইব্রাহিমের মৃত্যুতে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের নিরস্ত্র আন্দোলনের ওপর ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সারা বিশ্বের মানুষ। প্রতিরোধ আন্দোলনের নতুন কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন এই শহীদ। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, বিশ্বের নামী সব সংবাদমাধ্যম ইব্রাহিমের বীরত্ব নিয়ে প্রকাশ করেছে রিপোর্ট।

এক সময় মাছধরা নৌকার সাজসজ্জাকর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করলেও ইসরাইলি হামলায় পা হারানোর পর বেছে নেন গাড়ি ধোয়ার কাজ। হুইল চেয়ার থেকে উঠে গাড়ির বনেটের ওপর বসে গাড়ি ধোয়ার কাজটিই তাকে অধিক পরিচিতি এনে দিয়েছে। আর ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভকারীদের কাছেও তিনি ছিলেন অন্যতম প্রিয় সহযোগী। বিক্ষোভের ডাক এলেই ইব্রাহিম কাজ থেকে ছুটি নিয়ে চলে যেতেন প্রিয় মাতৃভূমির অধিকার রক্ষার আন্দোলনে।
ট্রাম্পের জেরুসালেম ঘোষণার পর গাজা ও পশ্চিম তীরে নতুন করে শুরু হয় ইসরাইলবিরোধী জোরালো বিক্ষোভ।

অন্যান্য দিনের মতো গত শুক্রবারও ইব্রাহিম যোগ দেন সীমান্তে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভে। এ সময় ইসরাইলি সেনাদের একটি গুলি লাগে তার মাথায়। লুটিয়ে পড়েন ইব্রাহিম। পড়ে গাজার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ইব্রাহিমের মৃত্যুর ঘটনায় ঝড় ওঠে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে।

ইব্রাহিমকে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের একটি ভিডিও গত শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনলাইনে দেখা হয়েছে ২৫ লাখ বার। শেয়ার করা হয়েছে ৩৩ হাজার বার। জেরুসালেমের সাংবাদিক নাসের আত্তা টুইটারে লিখেছেন, গাজার বাসিন্দারা মনে করেন ইব্রাহিমের মৃত্যুই তৃতীয় ইন্তিফাদার চূড়ান্তপর্যায়ের সূচনা করবে। অনেকেই তাকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার আলোচিত শহীদ ১২ বছর বয়সী মোহাম্মদ আল দুরার মৃত্যুর সাথে তুলনা করেন।

মিডল ইস্ট আইয়ের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিজের অক্ষমতার কারণে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভের সময় ইব্রাহিম বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতেন। তার ভাষায় ‘পঙ্গুত্ব সত্ত্বেও যতটুকু সম্ভব’ করতেন তিনি। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের কিছু শুভাকাক্সক্ষী তহবিল সংগ্রহ করে ইব্রাহিমের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার গুলি লাগার কিছুক্ষণ আগে এক সাক্ষাৎকারে ইব্রাহিম বলেন, ‘এই ভূখণ্ড আমাদের, আমরা তা ত্যাগ করব না। আমেরিকাকে অবশ্যই তার ঘোষণা প্রত্যাহার করতে হবে।’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মন্তব্য করুন