খালেদা-তারেককে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না : নজরুল
নাম - ছবি : সংগ্রহীত
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার জন্য সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে দলটির নেতারা।
আজ রোববার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মোহাম্মদ নূরুল হুদার সাথে সাক্ষাত করে এ উদ্বেগের কথা জানায়।
সাক্ষাত শেষে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আসলে হয় না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। সেই অংশগ্রহণের পথে বাধা সৃষ্টি করার চক্রান্ত বা অপচেষ্টা দেখছি। একেবারেই কোনো কারণ ছাড়া, কোনো প্রমাণ ছাড়া আমাদের নেত্রীকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান এবং আরো কিছু নিরীহ মানুষকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেরকম কোনো কিছু হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের যে আকাঙ্খা, যে প্রয়োজন সেটা বিঘ্নিত হবে। সেজন্য আমরা আশা করি যে সেরকম কিছু হবে না। আমরা সবাই মিলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারব।
সাক্ষাতে সিইসি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাস দিয়েছেন জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা জানি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের করার কিছু নেই। সম্ভবত দোয়া করা ছাড়া তাদের কিছু করার নেই। কিন্তু একটা জিনিস আমরা আলোচনায় অনুভব করেছি যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এরকম কিছু যেন না হয় সে ইচ্ছা, আকাঙ্খা, ভাবনা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের রয়েছে।
আমরা বলেছি যে, সরকারের যে চক্রান্ত দেখছি সেটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে প্রচণ্ড বাধা হবে। সে ব্যাপারে একমত তিনি। নিশ্চয়ই বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার জন্য যদি অন্যায়ভাবে চেষ্টা করা হয় তাহলে বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নিবে এটা মূর্খ ছাড়া কেউ ভাববে না।
সিইসি কোনো আশা দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান তারা। এখনও তারা সে বিষয়ে আগ্রহী। আমরাও বলেছি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে আমরা নির্বাচন করতে চাই না।
নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা আছে কি না- সেটা জানি না। সময়ই বলে দেবে। আমরা আশা করি নৈতিক অবস্থান থেকে নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ভূমিকা নেবে।
ঢাকা সিটিতে ইসির আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে বিএনপি জানতে চেয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা সিটি আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা প্রার্থী দিয়েছিলাম, নির্বাচনে যুক্ত হয়েছিলাম এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের যেসব কথা আমরা শুনেছি দেখেছি যে কারণে স্থগিত করা হয়েছে সেরকম কারণ নাকি ছিল না। তাহলে নির্বাচন স্থগিত হলো কেন। আমরা সাধারণ মানুষ সন্দেহ করে যে সরকার এই নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে ভীত হয়ে নানান কৌশলে এই নির্বাচন স্থগিত করেছে। সেই কৌশল থেকে এই প্রক্রিয়াটাকে মুক্ত করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যা কিছু করার দরকার করবে বলে আমরা আশা করি।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বন্ধ হয়ে গেল। আমরা তা চাইনি। আমরা আশাবাদী ছিলাম জয়লাভ করব। এটা আদালতের নির্দেশে বন্ধ করেছে। নির্বাচন কমিশন করে নাই। এরপরও আরো নির্বাচন আছে। এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমরা এটুকু মনে করি সেসব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে এবং অংশগ্রহণমূলক হবে। আর যদি কোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয় তাহলে সেটা নির্বাচন নয়। ওটা নির্বাচনের নামে প্রহসন বা খেলা। আমরা খেলা বা প্রহসনে যুক্ত হতে চাই না। আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
নজরুল ইসলাম খান জানান, মূলত বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ে কিছু নথি জমা দিতে তারা নির্বাচন কমিশনে এসেছিলেন। বিএনপির যে কাউন্সিল হয়েছে সেখানে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, গঠনতন্ত্র সংশোধন আছে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আছে। সে জিনিসগুলোর কপি নির্বাচন কমিশনকে দিতে এসেছেন।
প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
স্টাফ রিপোর্টার
মন্তব্য করুন