প্রচন্ড শীতে নীলফামারীর জনজীবন স্থবির
নাম - ছবি : সংগ্রহীত
কয়েক দিন ধরে চলা তীব্র থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত প্রবাহে নীলফামারীর জনজীবনে অব্যাহত রয়েছে নানামুখি দুর্ভোগ। উত্তরের হিমেল বাতাস ও ঘণ কুয়াশাপাত এ দুর্ভোগকে করেছে আরো ত্বরান্বিত। শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও শীতের তীব্রতা তেমনই রয়েছে। ফলে জনজীবন এখনও কাহিল ও স্থবির অবস্থাতেই রয়েছে।
কনকনে ঠান্ডায় লোকজন প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে খুব একটা বের হচ্ছেন না। সারাদিন কুয়াশার পাশাপাশি আকাশ থাকছে মেঘাচ্ছন্ন। ফলে, প্রায়শই সুর্যের মুখ দেখাও ভার। শুক্রবার জেলার কোথাও সূর্যের মুখ দেখা না গেলেও শনিবার দুপুরে সূর্য ক্ষাণিকটা উঁকি দিয়েছে। কিন্তু তা ছিলো নিরুত্তাপ। রাত নামার সাথে-সাথে পথ-ঘাট হয়ে পড়ছে অনেকটাই সুনসান। পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে সবখানে।
প্রচন্ড শীত বিভিন্ন পেশাজীবির আয়-রোজগারের উপর ফেলেছে নেতিবাচক প্রভাব। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সব থেকে বেশী। নীলফামারী সদরের হাতিবান্ধা এলাকার রিক্সাচালক আনোয়ারুল বলেন, ‘কামাই অর্ধেক কমি গেইছে। ঠান্ডাৎ কাহো ইস্কাৎ (রিক্সা) উঠির চায় না।’ ইটাখোলা ইউনিয়নের বাঁশের কামলা (ছকোরবন) হাফিজুল বলেন, ‘ঠান্ডাৎ কাহোয় কামোৎ নিবার চায়ছে না। হামার মরন সারা।’ সদরের শ্রীনাথ এলাকার কৃষক আমিনুর বলেন,‘আগাম জাতের আলু ধরি হামরা ফই-ফ্যাসাদোৎ (সমস্যা) পইছি। আলু নস্ট হয়া যায়ছে।।’ তবে, শহরের চা বিক্রেতা নূর মোহাম্মদ ও পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী বাদল চা ও গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন।
শীতার্ত মানুষ দিনভর খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। শীতে সবচেয়ে বেশী বেকায়দায় পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরাই বেশী। নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারীর বাজার মৌজা গ্রামের খতেজা, পৌর এলাকার গাছবাড়ির লিয়াকত আলী, হারুন, ইটাখোলা ইউনিয়নের মার্কাজ মসজিদ মহল্লার রশিদা, রোকেয়াসহ অনেক শীতার্ত মানুষ জানালেন, ‘তামোন ধকোরা-পাতি (গরম কাপড়) গাওৎ দিয়াও জারোক (ঠান্ডা) ঠেলা যায়ছে না। সাংঘাতিক ঠান্ডা। বাপ-দাদোর জনোমেও এমন জার দেখি নাই। এলাও হামেরা কারোঠে কুনো কম্বলো পাই নাই।’
নীলফামারীর ডিমলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার সকাল ৯টায় ৮.৬ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকলেও শুক্রবার একই সময়ে নীলফামারীতে তাপমাত্রা ছিলো ৭.৫ডিগ্রী সেলসিয়াস।
রাজা আহমেদ, নীলফামারী:
মন্তব্য করুন