বাংলাদেশে কিডনি রোগ কি উদ্বেগজনক পর্যায়ে?
বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসার সুবিধা বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা
বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, দেশটিতে শিশুর জন্মের সময় কিডনি রোগ শনাক্ত না হওয়ায় পরে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
শিশুদের কিডনি রোগ নিয়ে আজ থেকে ঢাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দু'দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হচ্ছে। জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা এতে অংশ নেবেন।
প্যাডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ নামের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংগঠন এটির আয়োজক।
এর সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ বিবিসিকে জানিয়েছেন যে মূলত অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব এবং চিকিৎসা সুবিধা না পাওয়ায় কিডনি রোগে আক্রান্ত শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
তার মতে বাংলাদেশে এখন শিশুদের যে কিডনি রোগের প্রবণতা তা উদ্বেগজনক পর্যায়ে আর এর একটি বড় কারণ হলো সাধারণত গ্রাম বাংলায় একজন মানুষের যখন বাচ্চা হয় তখন তার অর্থনৈতিক সামর্থ্য কম থাকে। এ কারণে তারা শিশুদের যথাযথ চিকিৎসা করাতে পারেনা।
মিস্টার হানিফের মতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিডনি রোগটা শুরু হয় শিশু বয়স থেকেই কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা তাদের হয়না।
তিনি বলেন কিছু ক্ষেত্রে কিডনি রোগের সমস্যাটি জন্মের সময় থেকেই শুরু হয় কিন্তু তাদের শুরুতেই চিহ্নিত করা গেলে হয়তো চিকিৎসা করা যেতো।
"পরে যখন এসব রোগীরা চিকিৎসকের কাছে আসে ততদিনে অবস্থার ৭০ ভাগ অবনতি ঘটে"।
প্যাডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ বলেন দেশে আসলে এর পূর্ণাঙ্গ তথ্যভিত্তিক কোন পরিসংখ্যান নেই, সেজন্য এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যও পাওয়া যায়না।
তবে হাসপাতালে ভর্তির ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুদের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ শতাংশ শিশু রোগী কিডনি রোগে আক্রান্ত।
তিনি বলেন অনেক সময় সাধারণ ইউরিন ইনফেকশনে হয়তো অনেক সময় ঔষধ দেয়া হয় কিন্তু ভেতরে আর কোন সমস্যা আছে কি-না যেটা তার কিডনির অবনতি পরে হতে পারে কি-না সেটা দেখা হয়না।
নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ৩০ হাজারের মতো মানুষ?
অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ বলছেন যদিও দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা সুবিধা বেড়েছে কিন্তু তারপরেও প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক মানুষ কিডনি রোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।
"প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত ব্যক্ত নতুন ভাবে কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে"।
তবে তার মতে এসব রোগীদের মূল সমস্যার সমস্যার শুরু হয় শিশুকাল থেকেই।
তিনি বলেন, "শিশু বয়সে এটা চিহ্নিত করা গেলে হয়তো এটার অনেকটাই প্রতিরোধ করা যেতো"।
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের জরিপ অনুযায়ী দেশটির প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন কিডনি রোগে আক্রান্ত।
চিকিৎসা আছে কতটা?
ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে শিশুদের কিডনি রোগের চিকিৎসা সুবিধা কিছুটা থাকলেও দেশের অধিকাংশ এলাকাতেই এ সুবিধা তেমন নেই বলে জানিয়েছেন মিস্টাার হানিফ।
তবে তার মতে সাধারণভাবে বিশ্বের অন্য জায়গাগুলোতে কিডনি রোগের যেভাবে চিকিৎসা হয় বাংলাদেশেও তাই হয়।
যদিও নতুন কিছু প্রযুক্তি বা উদ্ভাবন বাংলাদেশে এখনো এসে পৌঁছায়নি।
বিবিসি
মন্তব্য করুন