ছবি: সংগৃহীত
হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধে নতুন একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর। আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন এই প্রস্তাব কার্যকর হলে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি থাকবে পাঁচ থেকে সাত বছর। এই সময়ে জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস, বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এই চুক্তির আওতায় গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে, একপর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসান হবে দুপক্ষের মধ্যের সংঘাতের।
এরই মধ্যে আলোচনার জন্য হামাসের শীর্ষস্থানীয় একটি প্রতিনিধি দলের কায়রোতে পৌঁছানোর কথা। জানা গেছে, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দারবিশ এবং প্রধান আলোচক খালিল আল হাইয়া এই আলোচনায় থাকবেন। তবে, নতুন এই প্রস্তাব সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।
আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, হামাস ইঙ্গিত দিয়েছে যে, গাজা শাসনের দায়িত্ব তারা এমন কোনো ফিলিস্তিনি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত, যে বিষয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্তরে ঐকমত্য রয়েছে। কর্মকর্তা জানান, এই সংস্থা হতে পারে পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পিএ বা নতুন করে গঠন করা কোনো প্রশাসনিক কাঠামো।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনটি ২০০৭ সাল থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে। যদিও আলোচনার সফলতা সম্পর্কে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়, সংশ্লিষ্ট সূত্রটি মধ্যস্থতাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং হামাস অভূতপূর্ব নমনীয়তা দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অনেক আগেই গাজার ভবিষ্যৎ শাসনে পিএর কোনো ভূমিকা মেনে নিতে সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
এই প্রস্তাব এমন এক সময়ে এল, যখন মাত্র কয়েক দিন আগে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত ইসরায়েলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। ইসরায়েলের প্রস্তাবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে হামাসকে নিরস্ত্র হওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। গত শনিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও হুঁশিয়ারি দেন, হামাস ধ্বংস না হওয়া এবং সব জিম্মিকে মুক্ত না করা পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ শেষ করবেন না। এদিকে, হামাস বলেছে, জিম্মি মুক্তির আগে ইসরায়েলকে যুদ্ধ শেষের অঙ্গীকার করতে হবে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রচেষ্টায় হওয়া তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের পর চুক্তি লঙ্ঘন করে পুনরায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত ১৮ মার্চ নির্বিচারে হামলা শুরু করে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে। নতুন করে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে মাত্র এক মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫১ হাজার ২৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মন্তব্য করুন