প্রতীকী ছবি
শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সমাজ বিনির্মাণের হাতিয়ার এবং সমাজ দেহের বাহুডোর । সময়ের বিবর্তনে অত্যাধুনিকার ছোয়ায় শিশুদের স্নেহবোধ ও কদর মনে হয় বিপরীত দিকেই গতিশীল হচ্ছে। বিভিন্ন পদ্ধতিতে শিশু নির্যাতন চলছে অব্যাহতভাবে। যারপরনায় চেষ্টা করেও শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতার কঠিন রোলার সরানো যাচ্ছে না। অনাচারে সয়লাব আমাদের সমাজ। সময়ে সময়ে এবং অনেকটাই হঠাৎ করে নতুন নতুন আলামত দেখা যায়। পত্রিকায় দেখা যায়- শিশুদের গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন বা পিটিয়ে মারার খবর। খুলনার রাকিব নামের ছেলেটির পায়ুপথ দিয়ে পেটে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার এক সুতার কারখানায় সাগর বর্মন নামে ১০ বছর বয়সী এক বালকের পায়ুপথে কম্প্রেসর মেশিনের বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার খবর প্রকাশিত হয়েছে। রাজন হত্যার দায়ে প্রধান আসামি কামরুলসহ চারজনকে ফাঁসি ও সাতজনকে সাতবছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং রাকিব হত্যা মামলায় ২ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। কিন্তু আদালতের এমন রায় ঘোষণার পরও কি থেমে আছে এ বর্বরতা! কিন্তু তার পরও এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে আরও শিশুর উপর। গাছের ডাল দিয়ে কুষ্টিয়ার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র হাবিবুরকে বেধড়ক পেটানো হয়। লালমনিরহাটে ১৪ বছরের আল আমীন সোহাগ তার মাদ্রাসা থেকেই নিখোঁজ হয়। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মাকু পারার গ্রামে দোকানে চুরির অভিযোগে পেছনে দড়ি বেধে বাশের লাঠি দিয়ে তিনটি শিশুকে বেদম পেটানো হয়। জয়পুরহাটের ১২ বছরের সাজ্জাদ হোসেনের দোষ ছিল সে একটি দোকানের কাজ ছেড়ে অন্য একটি হোটেলে চাকরি নিয়েছিল। এই কঠিন অপরাধে (! ) তার চুল আর ভ্রু কেটে ফেলতে দ্বিধা করেনি হোটেলের মালিক আব্দুল মতিন ও রুবেল। ময়মনসিংহে মোবাইল চুরির অভিযোগে লাঠিপেটা করা হয় শিশু সাদ্দামকে। ফোন চুরির অভিযোগে জাহিদ ও ইমনের উপর চলে ছয় ঘন্টারও বেশি সময় অমানবিক নির্যাতন। শিশু রাজন, রাকিবের মামলার রায় হয়েছে। হবিগঞ্জের বাহুবলের চার শিশুকে হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনীদের শনাক্ত করা হয়েছে। ঘাতকদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও আদায় করা গেছে। কিন্তু হত্যা বর্বরতা থামছে না।
সাম্প্রতিক সময়ে শিশু হত্যা-নির্যাতন নতুন কোনো ঘটনা নয়। গত ৫ মাসে সংবাদপত্রে ৫৫’র বেশি এমন ঘটনার খবর ছাপা হয়েছে। অনেক ঘটনায় শিশুরা নিখোঁজ হয় এবং এক-দু’দিন পর তাদের লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশের, কোনো ডোবায়, খালে, বিলে বা নদীতে, অথবা ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে, কিংবা ধান ক্ষেতে অথবা পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তার মধ্যে। হত্যার ধরণগুলোও থাকে ভিন্ন ভিন্ন। কোনটি করা হয় গলা টিপে, গলা কেটে,ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অথবা অন্য কোনো পৈশাচিক উপায়ে। এসব হত্যাকাণ্ডের বেশিরভাগই ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত হয়ে থাকে।
বস্তুতপক্ষে কোমলমতি শিশুদের নিরাপত্তা কিছুতেই নিশ্চিত করতে পারছে না রাষ্ট্র ও অভিভাবকরা। নির্যাতন রোধে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও তাদের ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে পারছে না শিশুরা। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মহল। দেশের ভবিষ্যৎ ফুলের মতো শিশুদের মমতা আর ভালোবাসা দিয়ে সমাজের প্রতিটি নাগরিকের যেখানে আগলে রাখার কথা, সেখানে এই সমাজেরই কিছু বিকৃত মনের মানুষ তাদের উপর চালাচ্ছে জঘন্য নির্যাতন। এমনকি ঘৃন্য এ অপরাধের হাত থেকে মানসিক প্রতিবন্ধি শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। দেশব্যাপি শিশুদের ওপর হওয়া নির্যাতনের ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে শুধু অপরিচিত ব্যক্তি নয়, পরিচিত, নিকটাত্মীয়, প্রতিবেশীল দ্বারা ও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর যে ব্যক্তিরা শিশুদের ওপর এ ধরনের ঘৃন্য নির্যাতন চালাচ্ছে, তারাও ভিন্ন কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সের। এদের কেউ শিশুদের জোর করে, কেউ খাবার বা খেলনার প্রলোভন দেখিয়ে নির্জনস্থানে নিয়ে গিয়ে এ অত্যাচার চালাচ্ছে।
হিসাব মতে বলা হচ্ছে যে প্রতিমাসে গড়ে ৩৫ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষিতদের অধিকাংশের বয়স ৫-১২ বছর। বিশেষজ্ঞদের মতে দেশে শিশু অধিকার সুরক্ষায় আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। পথশিশুরা তো বটেই এমনকি পরিবারের নিরাপদ গন্ডির মধ্যে থেকেও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এছাড়া গৃহকর্মে নিয়েজিত শিশুদের ও এ নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কোমলমতি শিশু নির্যাতনে জড়িয়ে পড়ছেন কিছু কিছু শিক্ষক। তবে বাংলাদেশে কন্যা শিশুদের, ছেলে শিশুদের চেয়ে তুলনামুলক বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। মূলত এ বিষয়গুলোর প্রতি নজরদারী এবং নির্যাতন রোধে দেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ না থাকায় শিশুদের ওপর হওয়া এই নৃশংসতা রোধ করা যাচ্ছে না।
জাতীয় দৈনিকের আরেক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ‘এক বছরে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ১৬১ শতাংশ’। এতে বলা হয়েছে- যে দেশের শিশুদের অবস্থা দিনে দিনে নাজুকতর হচ্ছে। গত বছর থেকে চলতি বছরের প্রথম চার মাস অর্থাৎ ১৬ মাসে শিক্ষকের হাতে শাস্তি, চুরির অপবাদে দরিদ্র ও শ্রমজীবি শিশুদের পিটিয়ে নির্যাতন সহ অন্যান্য নির্যাতন ও বেড়েছে। ১০ টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে ফর্ম এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বলা হয়েছে ২৬৭টি এনজিওর জাতীয় মোর্চা শিশু অধিকার ফোরাম তাদের প্রতিবেদনে বলেছে শিশুর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। কোথায় কমেছে, তারও কিছু হিসাব দিয়েছে। মূলত প্রতিবেদনে শিশু নির্যাতন বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বলা হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এক মন্তব্যে বলেছেন- ‘দেশের আইনের শাসন আমরা প্রত্যক্ষ করি না, দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক অপরাধ হচ্ছে কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনকে সেভাবে প্রয়োগ করতে দেখছি না, আইনের শাসন দুর্বল থাকলে ধর্ষণসহ অন্যান্য উপসর্গ উপদ্রব চলতেই থাকবে।’
২০২০ সালে ধর্ষণের শিকার ১৯৯ টি শিশুর মধ্যে ২২ টি শিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। গত বছরের আলোচিত বিষয় ছিল ২৯২টি শিশু হত্যার শিকার হয়। বাবা মায়ের বিরুদ্ধে ৪০টি শিশু খুনের অভিযোগ উঠে। অন্যদিকে ২০১৯ সালে ৩৬৬ টি শিশু হত্যার শিকার হয়। অর্থাৎ গত বছরে শিশু হত্যা কমে ২০ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৯৫ টি শিশু খুন হয়েছে। এরপর রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছর ১০১ টি শিশু রাজনৈতিক সহিংসতায় খুন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি শিশু নিহত হয়। রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটে গত বছরে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এ চার মাসে। অন্যান্য নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে- পারিবারিক কলহ, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া, যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হওয়া, প্রেম ভালোবাসায় ব্যর্থ এবং কোনো শৌখিন জিনিস কিনে না দেওয়া সহ বিভিন্ন কারণে গত বছর ২২৮ টি শিশু আত্মহত্যা করে। যা এর আগের বছরের চেয়ে ৫১ শতাংশ বেশি। গত বছর অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধি পায় ১০ শতাংশ। তবে অপহরণের পর শিশু হত্যা কমেছে ২৩ ভাগ। গত বছর শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে (৭০ শতাংশ) হয়েছে। গত বছরে ১৩৬টি শিশু নিখোঁজ হয়। এছাড়া গত বছর ২৪টি অজ্ঞাত পরিচয় নবজাতককে কুড়িয়ে পাওয়া যায়। জন্মের পরেই রাস্তা, ডাষ্টবিন বা ঝোপে ফেলে দেয়া হয়েছিল, এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় ৫২টি শিশুর লাশ পাওয়া যায়। যার ৯৮ শতাংশই ছিল নবজাতক। গত বছর ৪৫১ টি শিশু বিচিত্র ধরনের শারিরীক নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়। এর মধ্যে ২১৯ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়। অন্যদিকে চলতি বছরের ১ম ৪ মাসেই ৯৬৬টি শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নির্যাতনের শিকার হয়। জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত আরেকটি বিশেষ প্রতিবেদন ‘শিশু নির্যাতন চলছেই’, শিরোনামে শিশুদের নির্যাতনের আরেক অনুসন্ধানি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শিশু নির্যাতন পরিস্থিতি ২০১০ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- বছরটিতে ২৬৭ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে মারা যায় ১২জন। গুরুতর আহত হয় ২৩৯ জন শিশু। ধর্ষণ ছাড়া অন্যান্য যৌন নির্যাতনের খবর প্রকাশিত হয় ১৫০ টি। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পর্যালোচনা অনুযায়ী বছরটিতে ৯০ শিশু অপহরণের শিকার হয়। অপহরণের পর খুন করা হয় ২ জনকে। পারিবারিক কলহ, মুক্তিপণ না পেয়ে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মা-বাবার পরকীয়ার জেরে ৩৩৫ শিশু খুন হয়। অশ্লীল ভিডিও চিত্র ছড়ানেরা ভয়ে বা অন্যান্য কারণে আত্মহত্যা করে ১৬৬ শিশু। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ২৪৫ শিশুকে সম্পৃক্ত করা হয়। এর মধ্যে মারা যায় ১৭৬ শিশু। বছরটিতে পাচার হয় ৪২ শিশু। এ্যাসিডদগ্ধ হয় ১০ শিশু। রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়ে ৪১ শিশু মারা যায়। ১০৭ শিশু গুরুতর আহত হয়।
তবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় শিশু নির্যাতনের এ বিষয়ে বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেছে। তাদের মতে- ‘নির্যাতনের চেয়ে শিশুরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে কোটি কোটি শিশু জড়িত। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কাজ হচ্ছে তার বিশাল সংখ্যক শিশুকে কর্মসূচির আওতায় আনা কঠিন কাজ।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরির মতে, ‘শিশু নির্যাতনের ঘটনা যাতে না ঘটে, বা ঘটনার পর যে ধরণের প্রক্রিয়া প্রয়োজন, সরকার সেদিকে নজর দেয়নি। থানায় শিশুবান্ধব কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়নি। ইউনিয়ন পর্যায়ে শিশু বিষয়ক কার্যক্রম সক্রিয় নয়।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- ‘মেয়ে শিশুরা বেশি নির্যাতনের শিকার হয়, শুধু মেয়ে হয়ে জন্মানোর কারণে সাত মাসের বাবলিকে এসিড খাইয়ে দেয় তার বাবা। এখন বাবলির বয়স ১৪ বছর। ঘটনার পর মামলা করলেও আসামি এখনও ধরা পড়েনি। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বের মাসের শেষ দিকে ডাষ্টবিন থেকে নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী আদুরিকে উদ্ধার করা হয়। তার ওপর নির্যাতনের ভয়াবহতা দেখে অনেকেই আঁতকে উঠেছিল। তারপরও বন্ধ হয়নি নির্যাতন। খুলনায় ১৩ বছরের সীমাকে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী শুধু নির্যাতনই করেনি, নয় মাস ডিপ ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকেই সরকার গৃহকর্মীর সুরক্ষা ও কল্যাণ আইন খসড়া প্রণীত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি আজও। ২০১১ সালের মে মাসে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের করা এক গবেষণা অনুযায়ী নগরের মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডিতে কর্মরত ৮৪৯ জন গৃহকর্মীর ১৭ শতাংশই যৌন নির্যাতনের শিকার। এর মধ্যে ৫২ শতাংশ প্রতিদিনই এ ধরনের নির্যাতনের গঞ্জনা সহ্য করেন।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যমতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ বেড়েছে ৩৫০ শতাংশ। ধর্ষণের পর হত্যার হার ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে যারা এমন অপরাধ ছড়াচ্ছে, তারা বেড়ে ওঠার সময়টায় শিক্ষা পায়নি। যৌন হয়রানি করাকে তারা অপরাধ বলে গণ্য করেনা। প্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের হয়রানি করা কঠিন বলে শিশুদের বেছে নেয়। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক তাজুল ইসলাম বলেন- ‘ধর্ষনের শিকার শিশুর অনাস্থা, অবিশ্বাস নিয়ে বড়হ য়। আর অন্য সব জটিল মানসিক রোগের মতো তাদের প্রকাশ ঘটে শারিরীক কোনো সমস্যা নিয়ে। কখনো পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাদের খিচুনিও হতে পারে। মানসিক সমস্যার পাশাপাশি শিশু মারাত্মক শারিরীক সমস্যায় ভোগে। [তথ্যসূত্র- প্রথম আলো, ০১/১১/১৬]
বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দিয়ে অল্প খরচে বেশি শ্রমের আশায় এক শ্রেণির অসাধু মালিক কোমলমতি সোনার সন্তানদের কাজে লাগায়। শিশু শ্রম আইন অনুযায়ী প্রশাসন সংশ্লিষ্ট মালিকদের তেমন কোন নিয়মের আওতায় আনেন না। বিচার বিশ্লেষণেও যায় না। দেশে যাই হোক, মিডিয়া এ ব্যাপারে যথেষ্ট তৎপর। সম্প্রতি ‘শিশু শ্রমে এখনো ১৭ লাখ শিশু’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশে এখন সাড়ে ৩৪ লাখ শিশু কর্মরত রয়েছে। যাদের কাজ শিশু শ্রমের আওতায় পড়েছে। বাকি শিশুদের কাজ অনুমোদন যোগ্য। কর্মরত শিশুদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত আছে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু। আর ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে। তাদের কাজের বৈশিষ্ট্য জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য সাংঘাতিক হুমকিস্বরূপ।
শিশুশ্রমের এ চিত্র বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক সমীক্ষার উপস্থাপন করেছেন। জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা-২০১৩ তে এ তথ্য পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে কর্মরত শিশু, শিশুশ্রম, এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা রয়েছে। ১৮তম শ্রম পরিসংখ্যানবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এবং ২০১৩ -এর সংশোধন অনুসারে কর্মরত শিশু বলতে বোঝায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে যারা সপ্তাহে ৪২ ঘন্টা পর্যন্ত হাল্কা পরিশ্রম বা ঝুঁকিহীন কাজ করে। এরকম শ্রম অনুমোদন যোগ্য। তবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী কোনো শিশু যদি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে তবে সেটা শিশুশ্রম হবে। তারা ও শিশু কর্মরত শিশুদের মধ্যে পড়ে যায়। আর ৫ বছর বয়সী যদি কেউ সপ্তাহে ৪২ ঘন্টার বেশি কাজ করে, সেটা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম হিসেবে স্বীকৃত।
বিডিএস জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষায় দেখা গেছে, সেসময় প্রায় ৭৪ লাখ কর্মরত শিশু ছিল। তাদের মধ্যে ৩১ লাখে ৭৯ হাজার শিশুর কাজ শিশু শ্রমের আওতায় ছিল। তবে এক দশকের ব্যবধানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্য তেমন কমেনি, কমেছে মাত্র ১১ হাজার। ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিশুশ্রম নির্মূল নীতিমালায় ২০১৬ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআই ডিএস) গবেষনা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান বলেন- ‘২০১৬ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল করা সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। তবে শিশুশ্রম কমানোর চেয়ে জরুরি হল ঝুকিপূর্ন শিশু শ্রম নির্মূলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।’ তিনি পরামর্শ দেন ‘যে সব পরিবারের শিশুরা কাজ না করলে সংসার চলবে না, পরিবারকে কিছু ভাতার ব্যবস্থা করে ওই শিশুকে কাজে যোগ দেয়া থেকে বিরত রাখা যেতে পারে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে ওই শিশুর দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে।’
বিবিএসের জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের ১৮টি খাতে ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৪ জন শিশু শিশুশ্রমে নিয়োজিত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯০ জন শিশু। শিশুশ্রমে বেশি দেখা যায় কৃষিক্ষেত্রে ও কলকারখানায়। যেখানে ১০ লাখের বেশি শিশু কাজ করে। সবচেয়ে বেশি সাড়ে ৫ লাখ শিশু উৎপাদন খাতে বা কলকারখানায় কাজ করে। আর কৃষিখাতে কাজ করে ৫ লাখ সাড়ে ৭ হাজার শিশু। দোকানপাটে ১ লাখ ৭৯ হাজার শিশু এবং নির্মাণ শিল্পে ১ লাখ ১৭ হাজার শিশু কাজ করে। শিশুশ্রমে নিয়োজিতদের ৫৭ শতাংশের কাজই অস্থায়ী। বর্তমান শিশুশ্রমে নিয়োজিত এমন ১০ লাখ ৭০ হাজার শিশু এক সময় স্কুলে গেলেও এখন আর যায় না। আর ১ লাখ ৪২ হাজার শিশু কখনো স্কুলে যায়নি। এসব শিশুর সবাই দারিদ্র্যে কারণে পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে মজুরি পায় এমন সংখ্যক শিশুর সংখ্যা ১০ লাখ ১৯ হাজার শিশু। ৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৪২ জন শিশু মাসে ৫ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা মজুরি পায়। আর আড়াই থেকে ৫ হাজার টাকা মজুরি পায় ২ লাখ ৮৪ হাজার ৪২৩ জন শিশু। আর প্রায় এক লাখ শিশু আড়াই হাজারের কম পায়। আর সাড়ে সাত হাজার টাকার বেশি পায় আড়াই লাখ শিশু। অপরপক্ষে সপ্তাহে ৪২ ঘন্টার বেশি বা দৈনিক গড়ে পাঁচ ঘন্টার বেশি কাজ করে বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের (১২ লাখ ৮০ হাজার) শিশু মজুরি কম পায়। এছাড়া প্রায় ৪ লাখ শিশুর মজুরি মেলে না। মাসে মাত্র ৫ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা টাকা পায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার শিশু। আর এ আড়াই লাখ শিশুর মজুরি সাড়ে সাত হাজার টাকার বেশি। ২ লাখ ৩৫ হাজার শিশুর মজুরি আড়াই থেকে ৫ হাজার টাকা। আর আড়াই হাজার টাকার কম মজুরি পায় ২০ হাজার শিশু।
এ জরিপ উপস্থাপনের পর ফোকলে পয়েন্ট কর্মকর্তা ও বিবিএসের যুগ্ম পরিচালক কবির উদ্দীন আহমদ বলেছেন- এক দশকের ব্যবধানে শিশু শ্রম অর্ধেকে কমে এসেছে। বিবিএসের জরিপ মতে:
জাতীয় দৈনিকে ‘৫৬ লাখ শিশু স্কুলের বাইরে’ শীর্ষক অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলের উপযুক্ত ৫৬ লাখ শিশু স্কুলে যায় না। এদের মধ্যে একটি অংশ কখনো স্কুলে যায়নি। অন্য অংশটি ঝড়ে পড়া। স্কুলের বাইরে থাকা শিশুর হার ভারতে ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশে বেশি, তবে পাকিস্তানের চেয়ে কম। ইউনিসেফে ও ইউনেস্কো স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের নিয়ে বৈশ্বিক উদ্যোগ; ‘গ্লোবাল ইনিসিয়েটিভ অন আউট অব স্কুল চিলড্রেন’ নামের সংস্থাটির সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পরিবারের আর্থিক অসংগতি ছাড়াও লিঙ্গ (জেন্ডার) বৈষম্য বসবাসের স্থান, সামাজিক অবস্থা, শিশুশ্রম জরুরি পরিস্থিতি, এসব কারণে বিপুল সংখ্যক শিশু স্কুলের বাইরে থেকে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে- প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বয়সী কেউ (৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি) শিশুদের স্কুলে নেয়া ও ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে। বাংলাদেশে প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বয়সী শিশুর সংখ্যা ২ কোটি ৬০ লাখ। এদের মধ্যে ৫৬ লাখই স্কুলের বাইরের। এর অর্থ হলো বাংলাদেশে স্কুল বয়সী ১৬ দশমিক ০২ শতাংশে ও শ্রীলঙ্কায় ১ দশমিক ০৯ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- বাংলাদেশে নিম্ন মাধ্যমিক বয়সী ৩০ দশমিক ০৭ শতাংশ শিশু স্কুলে যায় না। ভারত ও শ্রীলঙ্কায় এই হার যথাক্রমে ৫ দশমিক ০৭ ও ৩ দশমিক ০২ শতাংশ। দুটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের চেয়ে ভালো। পাকিস্তানের প্রাথমিকে ৩৪ দশমিক ০৪ শতাংশ ও নিম্ন মাধ্যমিক বয়সী ৩০ দশমিক ০১ শতাংশ শিশু স্কুলে যায় না। প্রাক প্রাথমিক স্তরে ও অনেক শিশু স্কুলে যায় না। এই হার বাংলাদেশে ৩৪ শতাংশ। অবশ্য প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশে প্রাক প্রাথমিক স্কুলে না যাওয়া শিশুরাই প্রাথমিকে ঝড়ে পড়ে বেশি। তবে প্রথিমিক ও গন শিক্ষাসচীব দ্বিমত করে বলেন- ‘বিদ্যালয় গমনোপযগী শিশুদের ভর্তি হওয়ার বিষয়ে যে তথ্য (প্রায় শতভাগ) সঠিক। তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে, বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকে। তাদের প্রতিবেদনে কোন বৈশিষ্ট্যে করা হয়েছে, তা না দেখে বলা যাবে না। ‘ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশে যেসব শিশু এখন স্কুলে যায় না তাদের ৩৪ শতাংশ কোনো এক পর্যায়ে ঝড়ে পড়া শিশু। শ্রীলঙ্কায় এই হার ৬৪ শতাংশ। স্কুলে যায় না, এমন শিশু ভারতে ৩৯ শতাংশ ও পাকিস্তানের ৫৯ শতাংশ শিশু কোনোদিন স্কুলে যায়নি। বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তরের শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার হার উদ্বেগজনকভাবে কম। প্রাথমিক প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে শেষ শ্রেণি পর্যন্ত না গিয়ে ঝড়ে পড়ার হার ৪০ শতাংশ, ভারতে ২৫ শতাংশ। অন্যদিকে দুটি দেশেই প্রাথমিক স্তর শেষ করার পর ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি হয় না।
বাংলাদেশের শিশুরা নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। দেশের পারিপার্শ্বিক কারণে শিকার হওয়া সংশ্লিষ্ট শিশুদের অনাগত জীবন বলতে আর কিছু থাকে না। পত্রিকান্তরে জানা গেছে যে বাংলাদেশে পথশিশুদের ব্যাপারে নানা উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। ‘১২ লাখ পথ শিশুর দুর্বিষহ জীবন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- দেশে চার লক্ষাধিক শিশু গৃহকর্মের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ ই মেয়ে শিশু। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের বয়সসীমা ৫-১৮ বছর। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুরা মারাত্মক ঝুঁকিপুর্ণ পরিবেশে দৈনিক গড়ে ১৫ ঘন্টা কাজ করে থাকে।
সংশ্লিষ্ট গবেষণায় দেখা গেছে গৃহকর্মে শিশুরা প্রায়ই নানা ধরনের শারিরীক, মানসিক এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। গৃহকর্মে নিয়োজিত অনেক শিশু চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে। কখনো কখনো গৃহকর্মে নিয়োজিত অনেক শিশুরা প্রায় বন্দিদশায় জীবন যাপন করে। তাদের সাথে তাদের পরিবারের কারোরই দেখা করার কোনো সুযোগ থাকে না। ঝুঁকিপুর্ণ কাজের সকল নিয়ামক উপস্থিত থাকলে ও গৃহশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় আনছেনা সরকার। গৃহকর্মে শিশুরা নিয়োজিত হওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক অসহায়ত্ব, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য গ্রাম ও শহরের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মসূচির ব্যাপক ফারাক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য, পিতা মাতার শিফা ও সচেতনতার অভাবকে বেশি দায়ী করা হয়। অপরদিকে দেশে পথ শিশুদের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য সাম্প্রতিককালে কোন জরিপ না হলেও এ ধরনের শিশুর সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
পথশিশুদের জীবন-যাপন অত্যন্ত দুর্বিষহ। তারা অধিকাংশ সময়েই রাস্তায় পার্কে, ট্রেনে, বাস ষ্টেশনে, লঞ্চ ঘাটে, সরকারি ভবনের নিচে ঘুমায় এবং প্রতিনিয়তই নাইট গার্ড কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়। অধিকাংশ পথশিশু তিন বেলা খেতে পায় না। ফলে তারা বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরার পচা-বাসী খাবার এমনকি ডাস্টবিনের দুর্গন্ধযুক্ত খাবারও খেয়ে থাকে। নোংরা স্থানে চলাফেরা ও ঘুমানেরা কারণে চর্ম রোগে আক্রান্ত হয় বেশিরভাগ পথশিশু। বিশেষ করে মেয়েরা যৌন বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়। শিশুরা সাধারণত তাদের কর্মস্থলেই নির্যাতনের শিকার হন। এজন্য শিশুশ্রম যদি নিরোধ করা যেত তাহলে নির্যাতনের এ রকমফের অবস্থা আর দেখতে হতো না।
আরবান ৯৫ প্রমাণ করে যে শিশু সংবেদনশীল হওয়ার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন নেই। দরকার শুধু শিশুর চোখ দিয়ে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করা। বাংলাদেশ সরকারকে শিশু বান্ধব পরিবেশ গড়ার জন্য সব খাতের সমন্বয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নগর পরিকল্পনা, অবকাঠামো নির্মাণ, সেবাদান ও দারিদ্র দূরীকরণের সময় শিশুদের চাহিদা বিশেষভাবে গ্রহণ করা দরকার। কোভিড- ১৯ মহামারি যেমন আমাদের সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অনেক বিষয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ দিয়েছে, আসুন আমরা ও শিশুদের নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে অনাগত দিনের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি। শিশু সংবেদনশীল সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করা সময়ের দাবি।
লেখক- কলেজ অধ্যক্ষ, গবেষক ও কলামিস্ট
আবুল কালাম আজাদ
মন্তব্য করুন