• , |
  • ঢাকা, বাংলাদেশ ।
সর্বশেষ নিউজ
* রাজধানীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ২ * লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪ * ইউনূসকে নিয়ে অযথাই শঙ্কায় নয়াদিল্লি * ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত মানবে না ছাত্রদল * জাবিতে শামীমকে পিটিয়ে হত্যায় ছাত্রলীগ নেতা হাবিব গ্রেফতার * তোফাজ্জল হত্যার দায় স্বীকার করে ৬ ঢাবি শিক্ষার্থীর জবানবন্দি * যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জামায়াতকে প্রস্তুত থাকতে হবে : বুলবুল * ফ্যাসিবাদের দোসর অনেক সচিব নাশকতার চেষ্টা করছেন: রিজভী * তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার অনুরোধ সেনাবাহিনীর * চেন্নাই টেষ্টে দ্বিতীয় দিনে ১৭ উইকেটের পতন, ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

সামাজিক অস্থিরতা ও মূল্যবোধ

news-details

ছবি: সংগৃহীত


সারা পৃথিবীতে বাড়ছে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা তবে এর সুফল পাচ্ছে না সমাজ। বিশ্ব সভ্যতা যান্ত্রিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, হারাচ্ছে মানবিকতা। ফলে ক্রমশই বাড়ছে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, বাড়ছে অশ্লীলতা, নষ্ট হচ্ছে সামাজিক সম্পর্কগুলো, সমাজ হয়ে উঠছে অস্থির। মানব সমাজে পচন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে এর বহি:প্রকাশ ঘটছে। অন্যদিকে বিশ্ব থেমে নেই, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্প, প্রযুক্তি, সভ্যতা, উন্নয়ন সবকিছুই এগিয়ে চলছে। কিন্তু সবকিছু কেমন যেন লক্ষ্যচ্যূত হয়ে পড়ছে, যেন পথহারা পথিকের ন্যায় কোথাও ঐক্য ও সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

গোটা বিশ্ব আমাদের সমাজ, মানব সমাজ। এ সমাজের অংশ হিসাবে আমাদের দেশ এবং সমাজও নানা সামাজিক অস্থিরতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। মানব সমাজের সার্বিক পরিবেশকে দুটি অংশে পৃথক করা যায়। একটি সামাজিক পরিবেশ, আর অন্যটি প্রাকৃতিক পরিবেশ। এদুটোর একটিও আর সুস্থ ও স্বাভাবিক নেই, হয়ে পড়েছে ভারসাম্যহীন। একদিকে সামাজিক পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার ফলে অযাচিত যুদ্ধ, হত্যা, ধর্ষণ, মারামারি, কাটাকাটি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, লুটতরাজ ইত্যাদি ব্যাধি সামাজিক পরিবেশকে অস্থির করে তুলেছে, অন্যদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্টের ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ-ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, অগ্নুত্পাত, ভূমিকম্প, বন্যা, খরা ইত্যাদি সময়ে-অসময়ে অস্বাভাবিকভাবে মহাবিপর্যয় ডেকে আনছে, প্রকৃতি হয়ে উঠছে লাগামহীন ও চরম খেয়ালী।

এখন, বিশ্ব মানবতার সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে, কোন আদর্শের প্রভাবে এমনটা হচ্ছে। সব মিলিয়ে সামাজিক ও প্রাকৃতিকভাবে পৃথিবীটা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। এ উভয়বিধ সমস্যার প্রধানতম কারণগুলো মোটামুটি আমাদের সবার জানা-ভোগবাদী, বস্তুবাদী ও পুঁজিবাদী মানসিকতা, পশ্চিমা সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ আরো বহুবিধ। প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অবশ্য বিশ্বব্যাপী অনেক কথা হচ্ছে, অনেক চুক্তি হচ্ছে, অনেক পরিবেশবাদী গ্রুপ কাজ করছে। বিশ্বমানবতার স্বার্থে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে টেকসই উন্নয়ন ও সবুজ অর্থনীতির উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এ সামাজিক পরিবেশের ভারসাম্য, যার দ্বারা আমাদের মননশীলতা প্রভাবিত হয়, আমাদের সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা যার ওপর নির্ভরশীল, তার কি অবস্থা? অনেক সমাধানও দেয়া হচ্ছে, নতুন নতুন আইন হচ্ছে, বিভিন্ন সামাজিক তত্ত্ব আসছে, কিন্তু সুস্থ ধারার সামাজিক পরিবেশ বিরাজ করছে না। বরং দিনে দিনে বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা। 

আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলো নষ্ট হচ্ছে। চাওয়া-পাওয়ার ব্যবধান হয়ে যাচ্ছে অনেক বেশি, ফলে আত্মহত্যা ও হত্যাসহ অন্যান্য অপরাধপ্রবণতা বেড়েই চলছে। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সামাজিক সম্পর্কের এমন নির্ভেজাল জায়গাগুলোতে ফাটল ধরছে, ঢুকে পড়ছে অবিশ্বাস। ফলে সমাজ ছাড়া হচ্ছে সুখ-শান্তি। 

সবচেয়ে বেশি অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছে যুব সমাজ, যারা একটি দেশ বা জাতির ভবিষ্যৎ। তারা শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে, হয়ে যাচ্ছে বখাটে, মদ্যপ, ধর্ষক ও সন্ত্রাসী। আর যারাও বা শিক্ষিত হচ্ছে তারাও ভোগবাদী ও লোভাতুর মানসিকতার কারণে নীতি-নৈতিকতা ও ধর্মীয়-সামাজিক মূল্যবোধগুলো রক্ষা করে চলতে পারছে না, বনে যাচ্ছে দুর্নীতিবাজ, সুদখোর ও ঘুষখোর। ফলে সমাজ ছাড়া হচ্ছে ন্যায়নীতি ও ন্যায়-বিচার। 

সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমাজের সকল ক্ষেত্রে মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় পরিলক্ষিত হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে অশনিসংকেত। আর দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষিত নাগরিক হয়েও আমরা যেন তাতে গা এলিয়ে দিচ্ছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে যে সামাজিক অস্থিরতাসমূহ প্রকট হয়ে দেখা দিবে, তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র যেকোন দেশের জন্য তা মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে। কেননা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোই এসব অস্থিরতা সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। 

মানব সমাজের প্রায় সকল ক্ষেত্রে এ অস্থিরতাসমূহের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দা, ওয়ালস্ট্রিট দখল করে। আন্দোলন, ইউরো জোন সংকট, চীনে চরম দুর্নীতি প্রভৃতি অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, মূল্যবোধহীন উন্নয়ন কোন টেকসই (Sustainable) মানবতাবাদী (Humanistic) উন্নয়ন নয়। এখন আমাদের উচিত হবে উন্নত বিশ্বের ভাল-মন্দ দিকসমূহ বিবেচনা করে সচেতন পদক্ষেপে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া। অন্ধ অনুকরণ নয়। কাজেই এসব মানবিক বিপর্যয় ও অস্থিরতা রোধে আমাদের আশু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আধুনিকতা ও উদারতার নামে নীতি-নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধগুলোকে সমাজ থেকে উৎপাটন করে, সামাজিক ভারসাম্যহীনতা ও অস্থিরতা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা বাতুলতা বৈ কিছু নয়। অথচ স্বেচ্ছায় ও সানন্দে নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ পালনের উত্সাহ ও নিদের্শনা মানুষ ধর্ম থেকে পেতে পারে। আজ মানুষের প্রয়োজনেই মানুষকে আবার মানবিকতার চর্চা করতে হবে, আর সুস্থ ধারার সমাজ গড়তে লালন করতে হবে নীতি-নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধগুলো। কেননা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ ধারায় বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে ও বখে যাওয়া রোধ করতে হবে, এর বিকল্প নেই।

চলতি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-দীক্ষা ও উন্নয়নে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই পাশাপাশি দেশের সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন কারণে বাড়ছে অস্থিরতা, বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা, বাড়ছে হতাহতের ঘটনা।

খবরের কাগজ উল্টালেই চোখে পড়ছে ধর্ষণ, আত্মহত্যা, খুন, শিশুনির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, মাদক, মারামারি আর হানাহানির খবর। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মূল্যবোধ তথা মানুষগুলোর নৈতিক অবক্ষয়। পাশাপাশি পারিবারিক বন্ধন ঢিলে হয়ে যাওয়া এবং অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন তারা। 

পরিবার আমাদের সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম মূলভিত্তি। এ সময়টায় বিভিন্ন কারণে পারিবারিক কলহের ঘটনা বেড়ে গেছে। বেড়ে গেছে পরিবারের এক সদস্যের হাতে আরেক সদস্যের খুন হওয়ার ঘটনা। স্বামী-স্ত্রীর কলহের জেরে প্রাণ দিতে হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুদের। পারিবারিক কলহের কারণে পরিবারের সবাই একসঙ্গে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। মানুষ এখন শুধু ঘরের বাইরেই নয়, তার আপনজনদের কাছেও নিরাপদ নয়। 

বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বছরে মোট হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৪০ শতাংশ সংঘটিত হচ্ছে পারিবারিক কলহের কারণে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, অভাব-অনটন, অর্থের প্রতি প্রবল দুর্বলতা, চাওয়া পাওয়ার অসঙ্গতির কারণে দাম্পত্য কলহ ও স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি বিশ্বাসহীনতা, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অস্থিরতা, অন্য দেশের সংস্কৃতির আগ্রাসন, স্বল্প সময়ে ধনী হওয়ার আকাঙ্খা, বিষণ্ণতা ও মাদকাসক্তিসহ বিভিন্ন কারণে সামাজিক অশান্তি বাড়ছে। 

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে খুন হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ জন। আর এর অধিকাংশই পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে। সমাজে কেউ অপরাধী হয়ে জন্ম নেন না। পরিস্থিতির কারণে। বেশিরভাগ সময়ে সে পরিবেশ তার কাছের মানুষরাই তৈরি করে দেয়। কখনও কখনও সমাজে মানুষদের আচরণ, অসহযোগিতার কারণে পরিবারে, সমাজে দ্বন্দ্ব সংঘাতের মাত্রা বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক যন্ত্রণা বা মনোকষ্টে ভুগলে এসব হতে পারে। এজন্য কাউন্সিলিং দরকার। প্রত্যেককে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা দরকার।

একাকিত্ব মানসিক বিষণ্ণতা সৃষ্টির অনেক বড় একটা কারণ। অনেক সংসারেই স্বামীরা বুঝতে পারেন না তার কাজের ব্যস্ততার কারণে স্ত্রীকে একদম সময় দেয়া হচ্ছে না। এজন্য অফিসে গেলে মাঝে মাঝে স্ত্রীকে ফোন দিতে হবে। মাঝে মাঝে কি করছে না করছে সেটির খোঁজ নিতে হবে। অফিস থেকে আসতে দেরি হলে বাসায় জানাতে হবে। নিজের ব্যস্ততার বিষয়টি স্ত্রীকে বোঝাতে হবে। আবার স্ত্রীকেও স্বামীর ব্যস্ততা বুঝতে হবে। ব্যস্ততার মাঝেও সপ্তাহে অন্তত একটা দিন স্ত্রীকে নিয়ে বিনোদনের জন্য পার্ক বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যাওয়া, সিনেমা দেখা, রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কোনো কারণে স্ত্রী যদি বুঝতে পারে তার স্বামী তাকে যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন না। তাহলে তাদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টিই হবে। একাকিত্বের ফাঁদে পড়ে মেয়েরা অনৈতিক কোনো সম্পর্ক বা মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

বিয়ে বা সাংসারিক জীবনে কোনোভাবেই যৌনতাকে বাদ দেয়া যাবে না। বরং যৌনতাকে ঘিরেই দাম্পত্য জীবনে গতি আসে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনো সংসারে অভাব-অনটন থাকলে যতটা অশান্তি হবে তার চেয়ে ভয়াবহ অশান্তি হবে যদি কোনো দম্পতির যৌন জীবন সুখের না হয়। পরকীয়া বা বিবাহ বিচ্ছেদের সবচেয়ে আদিম কারণ শারীরিক চাহিদা অপূর্ণ থাকা। 

মনোবিজ্ঞানী ড. মোহিত কামাল বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি, হতাশা বা দূরত্ব বাড়ার অন্যতম একটি কারণ হল শারীরিক চাহিদা অপূর্ণ থাকা। আমাদের দেশের অধিকাংশ ছেলে জানে না, একটা মেয়েকে কীভাবে শারীরিকভাবে সুখী করতে হয়। অনেকেই জানেন না, আদিম এই খেলায় ছেলের পাশাপাশি মেয়েরও পরিপূর্ণতা বা সন্তুষ্ট হওয়ার একটা ব্যাপার আছে। মেয়েদের অর্গাজম ঘটানোর ব্যাপারেও উদাসীন ছেলেরা। ছেলেদের যৌনজ্ঞানের অভাব মেয়েদের চরমানন্দ থেকে বঞ্চিত করে। এভাবে দিনের পর দিন মেয়েরা বঞ্চিত হতে হতে একটা সময় তাদের মধ্যে এক ধরনের উদাসীনতা বা হতাশার সৃষ্টি হয়। 

আমাদের দেশের ছেলেরা মনে করে মেয়েরা শুধু ভোগের বস্তু। বিছানায় নিজের সন্তুষ্টি অর্জন হলেই সব শেষ। সঙ্গীর জৈবিক চাহিদার ব্যাপারে কোনো তোয়াক্কা নেই। এ রকম ঘটনা যে শুধু ছেলেদের ক্ষেত্রেই ঘটে সেটি নয়। অনেক মেয়েও তার সঙ্গীর শারীরিক চাহিদা পূরণে সচেতন, কিংবা আগ্রহী নন। এই শারীরিক অপূর্ণতাই পর-পুরুষ বা পর নারীতে আগ্রহের সৃষ্টি করে। কাজেই শারীরিক চাহিদা পূরণের ব্যাপারে উভয়কে সচেতন হতে হবে। 

সংসার জীবনে অনেক ধরনের উত্থান-পতন থাকতে পারে। অভাব-অনটন থাকতে পারে। প্রত্যেকের ছোট ছোট ভুল থাকতে পারে। এসব ছোটখাটো বিষয়ে ছাড় দিয়ে পথ চলতে হয়। কিন্তু বর্তমানে আমাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই, আমাদের অনেক বেশি চাহিদা। বিয়ের আগে মেয়েরা ছেলেদের অর্থ সম্পদের বিষয়টি খেয়াল করে। এটি ছেলেদের ওপর একটি চাপ। বাড়তি চাহিদার জন্য অনেকে অনৈতিক কার্যকলাপেও জড়িয়ে পড়ে।

নগরগুলোতে লিভ টুগেদার বাড়ছে। বর্তমানে একটি পরিচিত শব্দ লিভ টুগেদার। দু’জন অবিবাহিত নারী-পুরুষ স্বামী-স্ত্রী না হয়েও একসঙ্গে পারিবারিক পরিবেশে থাকাটাই লিভ টুগেদার। এ ধরনের সংস্কৃতি মূলত বাইরের দেশেই প্রচলিত। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতেও এই ধরনের অনৈতিক সম্পর্কে জড়াচ্ছেন অনেকেই। বিশেষ করে, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরাও আগ্রহী হয়ে উঠছে এ ধরনের সম্পর্কে। এতে করে বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যাচেলরদের বাড়িভাড়া না পাওয়া, অর্থ সংকট এবং জৈবিক চাহিদার কারণে এ ধরনের অনৈতিক কাজে উৎসাহী হচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। ঢাকায় সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হারে বেড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছেলে-মেয়েদের লিভ টুগেদার। পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি এক ধরনের অন্ধ আবেগ ও অনুকরণের পাশাপাশি জৈবিক চাহিদার কারণে তারা লিভ টুগেদার করছেন। আবার ঘন ঘন বিচ্ছেদও ঘটছে। সহসা আলাদা হয়ে যাচ্ছেন তারা। ঘটছে খুনের মতো অপরাধ। আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন কেউ কেউ।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্লোবালাইজেশনের প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের সিনেমা-ডকুমেন্টারি ও নীল ছবি আমাদের সমাজমানসে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে, অনেকে সেটা গ্রহণ করছেন। সেই সঙ্গে সমাজে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের চিন্তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। সে কারণেও লিভ টুগেদারের হার বাড়ছে।

আবার অনেক ছেলেমেয়ে মনে করছে লিভ টুগেদার করে কয়েক বছর কাটিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারা আবার অবিবাহিত পরিচয়ে সমাজে ফিরে যাবে, যাতে সমাজে তাদের মর্যাদা ঠিক থাকে। লিভ টুগেদারের কারণে সমাজে এক ধরনের অপরাধপ্রবণতা তৈরি হচ্ছে, কোনো কারণে বনিবনা না হলে খুন হয়ে যাচ্ছে মেয়ে বা ছেলেটি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পর্কের টানাপড়েন ও আবেগজনিত কারণে বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ।

২০২৪ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আরেক জরিপে তথ্যে বলা হয়েছে- দেশে বিয়ে আর বিচ্ছেদ দুটির হারই বেড়েছে। তিন লাখের বেশি পরিবার ২০০৬ সাল থেকে ২০২১ সাল সময়ে মোট জনসংখ্যার অনুপাতে বিচ্ছেদের হার শুন্য দশমিক ৬ থেকে ১ দশমিক ১ শতাংশের মধ্যে ছিল। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ১ দশমিক ৪ শতাংশে। আবার ২০২১ সালে ১৫ বছরের ঊর্ধ্ব নারীবাদের সাধারণ বিবাহ বিচ্ছেদের  হার ছিল ২ শতাংশের সামান্য কম। সেটা পরের বছর বেড়ে হয় ৩ দশমিক ৮ শতাংশে। বিচ্ছেদের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। ২০২০ সালে বাংলাদেশে প্রকাশিত আরেক গবেষনা নিবন্ধ (ইবি এইউবি জার্নাল অব ল, ভলিউম- ২.২০২০) অনুযায়ী ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী নারী-পুরুষের মধ্যেও বিচ্ছেদের হার বেশি। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রপার্টি আইনবিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “৫ বছর টিকিয়ে রাখা বিয়েকে বলা হয় স্বল্প  মেয়াদী। ৫ থেকে ২০ বা ২৫ বছর পর্যন্ত মধ্যমেয়াদী, আর ২০ থেকে ২৫ বছরের বেশি সময় টিকে থাকা বিয়েকে বলা হয় দীর্ঘমেয়াদী বিয়ে।” আরেকটি গবেষনায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঘন্টায় ৮৬ টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। সেখানে প্রতি ৪২ সেকেন্ডে ১ টি করে বিচ্ছেদ হয়। সবচেয়ে বেশি বিয়ের ঘটনা ঘটে ৮ বছরের কাছাকাছি সময়ে।

সাইকোলজি টুডে জার্নালে ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক বৈজ্ঞানিক নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে- “যিনি একবার বিবহে বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যান, তার মধ্যে পুনর্বার বিচ্ছেদের প্রবনতা বেশি থাকে। পশ্চিমা বিশ্বে ডিভোর্স ৫০ বছর বয়স হওয়ার পর বিচ্ছেদ এর হার বাড়ছে, কিন্তু এরপরও তা ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে হওয়া বিচ্ছেদের চেয়ে কম। তাতে বলা হয়েছে, বিয়ে পরবর্তী দাম্পত্য জীবন যত দীর্ঘ, বিচ্ছেদ হওয়ার প্রবনতা তত কমে। সাইকোলজি টুডের তথ্যানুযায়ী দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে যত বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। তার বেশির ভাগই ২য়, ৩য় বিয়ে হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে যে হারে এ জাতীয় পারিবারিক অশান্তি অস্থিরতা বাড়ছে, তা অনাগত দিনের জন্য জাতি শংকিত।

আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক কৃষ্টি, সংস্কৃতি, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও অনুশাসনের অবক্ষয় দিন দিন বেড়ে উঠছে। মানুষের সভ্যতার উপকরণগুলো যেন খসে পড়ছে, ভেঙে পড়ছে সামাজিক শৃঙ্খল, তরুণ সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। তরুণদের মধ্যে মাদকাসক্তি, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির নেশা, বখাটে, উগ্রতা লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে চলছে। সমাজের অভিভাবক শ্রেণিকে শ্রদ্ধা এবং তোয়াক্কা করে না এই তরুণরা। অভিভাবক শ্রেণিও তাদের এই ঔদ্ধত্য দেখে চুপ হয়ে থাকে। শাসন-বারণ করার ইচ্ছে পোষণ করেন না; কারণ শাসন করতে গেলে যদি ওই তরুণ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কিংবা অসম্মান করে বসে তাছাড়া এখনকার উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা গুরুজনদের গায়ে হাত উঠাতেও দ্বিধাবোধ করে না। এর ফলে যা হচ্ছে, এদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশকে ছুটে আসতে হচ্ছে। অথচ আগে এ কাজটি সমাজের অভিভাবকরাই করতেন। 

আমাদের পরিবার ও সমাজের মূল্যবোধের অবনমন এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেসব সামাজিক ও পারিবারিক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে, এগুলোকে এখন আর বিচ্ছিন্ন বলে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। একের পর এক অকল্পনীয় ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, আমরা কি দিন দিন স্বার্থপর ও বর্বরতার দিকে ধাবিত হচ্ছি? এর কারণ কি? এর প্রধান কারণ যদি ধরা হয় অর্থ এবং এ নিয়ে প্রতিযোগিতা ও এর প্রতি প্রবল আকর্ষণ, তবে এ কথাও বলা যায়, আমাদের দেশের মানুষ যুগ যুগ ধরেই অর্থের টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল, সে সময়ও মানুষ তার নৈতিক চরিত্র হারায়নি। অভাবের মধ্যেও তার নীতি-নৈতিকতা দৃঢ় ছিল। এখন সমাজে মান-সম্মান ও ইজ্জতকে তোয়াক্কা করার প্রবণতা কমে গেছে। অনেকের মধ্যে এমন প্রবণতা বিরাজমান, ভালো মানুষ না হলেও অর্থ-বিত্তের মালিক হতে পারলে মান-সম্মান জুগিয়ে নেয়া যায়। এর নজিরও কম নয়। দেখা যায়, দুর্নীতিগ্রস্ত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীর একটি অংশ সমাজের নিয়ন্তা হয়ে বসে আছে। তাদের অর্থ আছে, গায়ের জোরও আছে। তারা মনে করে, এই দুই শক্তি থাকলে মান-সম্মান এমনিতেই তাদের পায়ে লুটিয়ে পড়বে। 

বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, আমরা সম্মিলিতভাবেই এদের অবস্থানকে শক্ত করার সুযোগ করে দিচ্ছি। আমাদের মধ্যে যাদের এখনও সুকুমার বৃত্তি রয়েছে, তারা যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপবাসী হয়ে বসবাস করছি। কে মরল আর কে মারল, এ নিয়ে টু শব্দ করি না। কীভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হয়, তা জেনেও উদ্যোগী হই না। আমাদের দুর্বলতার এ সুযোগটাই নিচ্ছে সমাজের মাথা হয়ে থাকা দুষ্টচক্র। শুধু সমাজের এই দুষ্টচক্র নয়, রাজনীতি থেকে রাষ্ট্র পরিচালকরাও এ সুযোগ নিচ্ছে। তারা আমাদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। এ সময়ে খুব বেশি উচ্চারিত হচ্ছে, ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ কথাটি। সত্যিকার অর্থেই আমরা একটা ভয়ের পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেখানে উচিত কথা বললে অনেক সময় হেনস্থার শিকার হতে হয়। যারা এ কাজটি করে এজন্য যে, হুমকি-ধমকি দিয়ে ভীতি সৃষ্টি করতে না পারলে তাদের দুষ্কর্মের রাজত্ব কায়েম করা যাবে না।

আমাদের নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অধঃপতনের যে কথা এখন উঠছে, এর মূল কারণ হচ্ছে, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার মতো একটি হাইপথিটিক্যাল কথা বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে মূল্যায়ন না করে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর অসাম্প্রদায়িকতার কথাকে প্রাধান্য দেয়া। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনোজগতে এক ধরনের পরিবর্তন এবং অস্থিরতা ও দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তা না হলে মা কর্তৃক সন্তান, সন্তান কর্তৃক পিতা-মাতা হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হবে কেন? যদি এসব ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের ধর্মীয় মূল্যবোধ বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট থাকত, তাহলে এ ধরনের অকল্পনীয় ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পেত না। এখন রাষ্ট্র পরিচালকদের পক্ষ থেকেই বলা হয়, বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। অথচ এ দুটো শব্দের অর্থ সাধারণ মানুষের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। 

যারা বুঝতে সক্ষম, তাদের মধ্যে এ প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, ধর্ম নিরপেক্ষ মানে কি এই যে, কেউ ধর্মপালন করবে না? আবার এই প্রশ্নও আসতে পারে, ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে যদি প্রত্যেক ধর্মের মানুষ পারস্পরিক সহবস্থানে থেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করা বোঝায়, তাহলে বাংলাদেশে কি এই পরিস্থিতি নেই? রাষ্ট্র পরিচালনায় যারাই থাকুক না কেন, তাদের ধর্মের প্রতিফলন কি তাদের কর্মের ওপর প্রভাব ফেলে না? যদি তা না হয়, তাহলে তো তাদের কর্মে সব ধর্মেরই প্রতিফলন থাকতে হবে। এটা কি সম্ভব? অথচ স্বাভাবিক নিয়মই হচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পক্ষেই রাষ্ট্র পরিচালকদের থাকতে হয়। সারাবিশ্ব এ নিয়মেই চলছে। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা ভারতেও তার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামতের ভিত্তিতেই পরিচালিত হচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বীদের ভোটেই তারা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারাবিশ্বে তাই হচ্ছে। আমাদের দেশেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ভোটেই সরকার নির্বাচিত হয়। 

কাজেই এই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসের কথা না বলে ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলা কতটা যুক্তিসঙ্গত? এটা কি বাস্তবতাকে অস্বীকার করা নয়? সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধ ও বিশ্বাস যখন রাষ্ট্র পরিচালকদের পক্ষ থেকে উপেক্ষিত হয়, তখন এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পুরো সমাজে পড়তে বাধ্য। সমাজে একের পর এক অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটা স্বাভাবিক। বরং চাপিয়ে দেয়ার মতো কোনো ধরনের উদ্ভট মতবাদ নিয়ে কথা না বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিরায়ত বৈশিষ্ট্য ও মূল্যবোধকে উজ্জীবিত করতে পারলেই সমাজ থেকে অস্বাভাবিক ঘটনা কমে যাবে।

করণীয়:

১. কোরআন হাদিসের যথার্থ জ্ঞান অর্জন।

২. ইসলামি অনুশাসন ও পরিবেশ তৈরি করা।

৩. পারিবারিকভাবে আচরণগত সবাইকে সম্মানের সাথে দেখা।

৪. বিনয়-নম্রতা ও পারস্পরিক সম্পর্ক আরো মজবুত করা।

৫. পরিবারিক হৃদ্যতা ভালোবাসা, আস্থার, জায়গা মজবুত করা।

৬. পারস্পরিক কাউন্সিলিং করা।

৭. বেশি বেশি ইসলামি মূল্যবোধ সম্পন্ন আলোচনা ও বই পড়া।

৮. ভারতীয় টিভি চ্যানেল থেকে দূরে থাকা।

৯. মোবাইলের নেগেটিভ বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা।

১০. ইসলামী আদল-ইহসান ও পর্দায় অভ্যস্থ হওয়া।


অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ

মন্তব্য করুন