• , |
  • ঢাকা, বাংলাদেশ ।
সর্বশেষ নিউজ
* ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১৩৯ * সরকার কি চাইলে এখন রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দিতে পারে? * রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনের রাস্তা অবরোধ * পদত্যাগ করতে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম * ১০১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ * জামায়াত আমিরের সাথে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ * পুলিশের ২৫২ এসআইকে অব্যাহতিতে রাজনৈতিক কারণ নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * মাহফুজ আনামের কাছে প্রশ্ন: হাসিনা-মুজিবের দুঃশাসনের পার্থক্য কোথায়? * ইরানকে গোপন তথ্য দেয়ায় ৭ ইসরাইলি আটক * নিরাপত্তার স্বার্থে এখনই শীর্ষ নেতার নাম ঘোষণা করছে না হামাস

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংস্কার উদ্যোগ কতদূর?

news-details

ছবি: সংগৃহীত


বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নানা কেলেঙ্কারি লেগেই থাকে। সিন্ডিকেটের কব্জায় আবদ্ধ দেশের অর্থনীতি। ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে এই সিন্ডিকেটের বড় একটা নিয়ন্ত্রণ থাকায় সহসায় নির্দিষ্ট বলয়ের বাইরে কেউ সুবিধা করতে পারে না। দেশের বড় বড় ব্যবসায়িক গ্রুপগুলো বেসরকারি খাতের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকলেও তারা ভালো ভূমিকা অতীতে পালন করতে পারেনি। যার কারণে আর্থিক খাত চরম হুমকির মুখে পড়েছে। মাঝে মাঝেই শেয়ারবাজারে দেখা দেয় অনাকাঙ্ক্ষিত অস্থিরতা। 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হলে নতুন অন্তর্বর্তীকারীন সরকার এই খাতটির সংস্কারে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পদক্ষেপ হলো গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে এবং স্বার্থ সুরক্ষায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফেরাতে পদগুলোতে উপযুক্ত কর্মকর্তাদের পদায়ন। সেই ধারাবাহিকতায় যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অন্য অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে সরিয়েছে সরকার।

দেশের অর্থনীতির আকার বেশ বড় হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে আকার বৃদ্ধির সাথে সাথে জিডিপি বাড়ল কিনা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঋণ বাড়ল না কমল তাও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। ঋণনির্ভর বাজেট বা ঘাটতি বাজেট থেকে এখনো বাংলাদেশ বের হয়ে আসতে পারেনি। দেশের মূল বাজেটের এক তৃতীয়াংশ এখনো ঋণনির্ভর বা ঘাটতি রয়ে গেছে।

দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে যে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করা দরকার তার মধ্যে অন্যতম হলো- সরকারের ও জনগণের আয়ের কাঠামোকে মজবুত করা। বিনিয়োগকে নিরাপদ করা। ব্যবসায়িক পরিবেশকে সমুন্নত রাখা। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও রেমিট্যান্স আহরণের ভারসাম্য বজায় রাখা, আমদাানি রফতানির ভারসাম্যপূর্ণ করা এবং বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা।

বাংলাদেশের আর্থিক খাতের বড় সংকটটি হলো মানি লন্ডারিং বা বিদেশে টাকা পাচার এবং আভ্যন্তরীণ দুর্নীতি। যা কোনোভাবে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে বা রোধ করতে পারেনি। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে দেশের আর্থিক খাত ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়ে আসছে। 

ওয়াশিংটনভিত্তিক অর্থিক খাতের গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটির (জিএফআই) একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। পাচার হওয়া টাকার বেশিরভাগ গেছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায়।

অর্থপাচারের সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তি, রাজনীতিক ও আমলারা জড়িত থাকেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে বিগত  আওয়ামী লীগ সরকারের ৭০ জনের বেশি মন্ত্রী-এমপি, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তা এই পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল। বাস্তবতা হলো টাকা পাচার করা যতটা সহজ, তা ফেরত আনা আরও কয়েকগুন কঠিন। 

পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করার ক্ষেত্রে আমাদের বিদ্যমান এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়েছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া বিদেশের সঙ্গে থাকা দেশের যেসব নেটওয়ার্ক আছে, সেগুলোও  ব্যবহার করার ওপর জোর দেন এই গবেষক। তবে বাংলাদেশ সরকার বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা এবং চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারে কূটনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এরই মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। দেশগুলো বাংলাদেশকে সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছে। এখন দেখার বিষয় তাদের উদ্যোগগুলো কতদূর গড়ায়?

এদিকে ব্যাংকিং খাত সংস্কার, মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ ও কর সংস্কারসহ উদ্বেগের মূল ক্ষেত্রগুলোতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কারিগরি সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি আইএমএফ প্রতিনিধি দল একটি সফরে বাংলাদেশে এসে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জোরদার এবং সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। এসময় ব্যালেন্স অব পেমেন্ট সাপোর্টের পাশাপাশি ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতের সংস্কার নিয়েও বৈঠক করেন তারা।

বাংলাদেশকে টাকা পাচার বা দুর্নীতির প্রধান মাধ্যম হলো ভূয়া বিনিয়োগ, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ভূয়া বিনিয়োগ প্রকল্প দেখিয়ে ঋণগ্রহণ। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন বেসরকারি ব্যাংকের বেশ কয়েকটির অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে উঠে আসে যে এসব ব্যাংক ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদন্ড মেনে চলা হয়নি। গ্রুপটির ৬টি ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটি দেউলিয়া হওয়ার পথে। সরকার গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় এসব ব্যাংকের বিষয়ে কঠোরতা আরোপ করেছে। একই সঙ্গে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনেক ব্যাংকে আমানত রাখাকে নিরাপদ ভাবছেন না গ্রাহকরা। কারণ সম্প্রতি পদ্মা ব্যাংকে এফডিআরের ১২৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ‍উত্তোলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে রাষ্ট্রাত্ত্ব জীবন বীমা করপোরেশন। কারণ ব্যাংকটি গ্রাহককে কোনো প্রকার মুনাফা দিতে পারছিল না। 

আর্থিক খাত বিভিন্ন দিক থেকে জর্জরিত হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। রাজস্ব আদায় যথাযথভাবেও হচ্ছে না। আর্থিক কেলেঙ্কারি রোধ ও শৃঙ্খলায় আনতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের বৃহৎ সাতটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করতে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের কার্যালয়কে নির্দেশ দেয়। কোম্পানিগুলো হলো-সুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাসা গ্রুপ ও থার্ড ওয়েড টেকনোলজিস লিমিটেড (নগদ লিমিটেড)।

এদিকে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই টাস্কফোর্স মূলত দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদ, বড় ঝুঁকি এবং দুর্বল ব্যাঙ্কগুলোর মূল অর্থনৈতিক সূচকগুলোর একটি বিস্তৃত মূল্যায়ন করবে। এটি প্রকৃত ঋণের স্থিতি, প্রভিশন ঘাটতি, তারল্য শর্ত, নেট মূলধন এবং সম্পদের সঠিক মূল্যও যাচাই করবে। সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলো থেকে খারাপ সম্পদ শনাক্তকরণ এবং পৃথকীকরণের দিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা এই টাস্কফোর্সের। তবে এই উদ্যোগের একমাস অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত কি কি কাজ তারা করেছেন তা দৃশ্যমান নয়। শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনে তাদের সুপারিশগুলোও এখনো জানা যায়নি। তবে ব্যাংকিং খাত নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কাজ এগুচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। বিগত সময়ে কিছুটা ভাটা পড়লেও গত সেপ্টেম্বরে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে ২.৪০ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১ অক্টোবর হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানিয়েছে। এতে দেখা যায় আগের অর্থবছরের তুলনায় রেমিট্যান্স ৮০.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ইতিবাচক দিক। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির কালোবিড়ালদের তাড়াতে না পাড়লে স্থিতিশীলতা ফিরবে না। ফলে কখনো কখনো মূল্যস্ফীতি, মুদ্রাস্ফীতি, ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের মতো বিপর্যয়গুলো লেগেই থাকবে।

বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিম্নআয়ের মানুষরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। যে কোনো দেশে রাজনীতিকে প্রভাবিত করে মূল্যস্ফীত। এটি মূলত একটি অর্থনীতির সূচক। গবেষণায় দেখা গেছে মূলস্ফীতি সরকারের জনপ্রিয়তাকে হ্রাস করে। র্থনীতির নীরব ঘাতক হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি। বাংলাদেশের বর্তমান আর্থিক অবস্থার জন্য বিগত সরকার বহুলাংশে দায়ী। আজ মূল্যস্ফীতি যে আকাশছোঁয়া তার জন্য সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে গত আগস্ট মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হয়েছে। যদিও সাধারণ মানুষ মূল্যস্ফীতি কমার কোনো প্রভাব জীবনযাত্রায় খুঁজে পাচ্ছে না। 

দেশের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো শেয়ারবাজার। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা পুঁজির নিরাপত্তা না পেলে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ যত বাড়বে তত বেশি দেশের অর্থনীতি সক্ষম হতে থাকবে। পুঁজি অলস বসিয়ে রাখলে অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক। 

তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর শেয়ারবাজারের সূচকে বেশ উত্থান-পতন হয়েছে। শেয়ারবাজারের সূচক সবচেয়ে বেশি পতনের মুখে পড়ে যেদিন (১৯ আগস্ট) খন্দার রাশেদ মাসকুদ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন। সেদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৭৭৫ পয়েন্ট। তার যোগদান পরবর্তী সময়ে বেশিরভাগ সময়ে সূচকে পতন ঘটেছে। তবে গত দুমাসে মূল্য সূচক কমলেও শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। 

চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়।

অতীতের ন্যায় যেন কোনো সিন্ডিকেট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা, শেয়ারবাজার দখল কিংবা কেলেঙ্কারি করতে না পারে এজন্য স্টেকহোল্ডারসহ সকলকে সজাগ ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট(বিএফআইইউ) যাতে তৎপর থেকে অসংগতিগুলো শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।


এম এ জিসান

মন্তব্য করুন