ছবি- সংগৃহীত
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যেতে কাজ করছে। আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন সূচক আর্থিক, অবকাঠামো, শাসন ব্যবস্থাসহ সবদিক দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে দেশ। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য খাতও নানা দিক থেকে এগিয়েছে। দেশের আর্থিক খাতের লাইফলাইন মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য ইউরোপ,আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির আয়। বাংলাদেশের গ্রামীণ-শহুরে পর্যায় সবখানে নাগরিকদের জীবনমানের যে উন্নয়ন তার সিংহভাগ অবদান হলো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ত্যাগ। বলতে গেলে তারাই দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল বা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকে ঘিরে হত্যাকাণ্ডে দেশ বিদেশে বেশ প্রভাব পড়েছে। সর্বাত্মক বাংলা ব্লকেড ও পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের দমনে চালানো হত্যাকাণ্ডে দেশ বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ হয়েছে। এতে দেশের ইমেজ সংকটসহ নানা জটিলতায় পড়েছে বাংলাদেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। আর্থিক খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে, আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে।
শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা, প্রাণহানি, ইন্টারনেট বন্ধ ও নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটির কারণে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমে আসে। আমদানি-রফতানিসহ শিল্পের চাকা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। এসব কারণে অর্থনীতিতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ কোটি ডলার বা ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার(১৮ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত টানা ৬ দিন প্রায় সবকিছুই বন্ধ ছিল।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রফতানির সব খাতেই ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতির পরিমাণ আগামীতে আরও বাড়বে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে ইমেজ সংকট।
বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসার বেশ প্রসার ঘটেছে। আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়ে এই খাতটিও। এরমধ্যে রয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসা ফুড ডেলিভারি, ই-কমার্স ও আউটসোর্সিং খাত। কারণ ইন্টারনেটের অভাবে তারা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় দেশের তৈরি পোশাক খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ এই খাত থেকে আসে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এশিয়া বিষয়ক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর পিয়েরে প্রকাশ ২৫ জুলাই এক প্রতিবেদনে বলেন, 'সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, দেশের এই অস্থিতিশীলতার কারণে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে অন্যদেশে ঝুঁকতে পারে। আর এই আন্দোলনের প্রভাব আগে থেকেই অসুস্থ অর্থনীতির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।'
আর্থিক খাতের একটি তথ্যে দেখা গেছে চলতি জুলাই মাসে ২৭ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর মধ্যে প্রথম ১৩ দিনে আসে ৯৭ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং ১৪ থেকে ২০ জুলাই ৭ দিনে আসে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। মাসের তৃতীয় সপ্তাহ অর্থাৎ ২১ থেকে ২৭ জুলাই তা নেমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ডলারে। এর আগে প্রথম ২৪ দিনে ১৫০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল বাংলাদেশে। জুলাই মাসের প্রথম ১৮ দিনে দেশে দৈনিক রেমিট্যান্স এসেছে গড়ে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। তবে এই ধারাবাহিকতার পতন হয়েছে ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। কারণ এই সময়ে দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চরম অস্থিরতা চলছিল।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় জুন মাসের তুলনায় জুলাইতে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। জুন মাসে প্রতিদিন দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২১ হাজার ৬৬৬ ডলার। আর তা কমে জুলাইতে হয়েছে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪ ডলার।
এক বছর আগে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রবাসীরা ১৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান, এ বছর যার তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় মোবাইল ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট যোগাযোগসহ সব ধরনের লেনদেন বন্ধ থাকায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বন্ধ ছিল। এতে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর-কাস্টমস প্রায় ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে স্থবিরতায় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, গত এক সপ্তাহে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে ৮৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার ঘটনায় অনেক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে সত্যি। অগ্নিসংযোগে বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানে হাজার কোটি টাকা ক্ষতির কথা বলেছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
দেশে চলমান কারফিউয়ের মাঝে গত বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে সীমিত সময়ের জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু হয়েছে। টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু হওয়ায় মাসের শেষ দিনগুলোতে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
এদিকে দেশের কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রভাব দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করতে নেমে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যে ৫৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন ও একজনের ১১ বছরের শাস্তি হয়েছে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। প্রিয় মাতৃভূমিতে চলমান অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বিবেকের তাড়নায় হয়তো তারা বিক্ষোভে নামেন। কিন্তু বরণ করতে হলো করুণ পরিণতি। যারা কষ্ট করে নিজের পরিবার ও দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বড় ত্যাগ করে প্রবাসে থাকছেন। এ দায় কী শুধু তাদের? যাদের টাকার তেলে ক্ষমতাসীনদর গাড়ির চাকা ঘোরে, তারা কী দায় এড়াতে পারে?
আরও পরিতাপের বিষয় হলো যখন আরব আমিরাতে আটক বাংলাদেশের নাগরিকদের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে বৈদেশিক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, দেশটির আইন ভঙ্গ করায় তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি হয়েছে। এটি তাদের রাষ্ট্রীয় বিষয়। প্রশ্ন হলো তারা রাষ্ট্রের নাগরিক। অপরাধী হলেও তাদের প্রতি রাষ্ট্রের দায় আছে। এটি কীভাবে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এড়াতে পারে? তাদের রক্ত ঘামেই তো দেশে রেমিট্যান্স আসে!
বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের বিচারে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বছর শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে দেশটি। গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) দেশটি থেকে এসেছে ৪৬৪ কোটি ডলারের বেশি। আগের বছরের চেয়ে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। তবে দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রদান বন্ধ হওয়ার গুঞ্জনও উঠেছিল। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রচারিত হয়েছে। যদি বৈদেশিক মন্ত্রণালয় বলছে ভিন্ন কথা। তবে নেতিবাচক কোনো প্রভাব আছে কি না তা হয়তো ভবিষ্যতে দৃশ্যমান হবে।
সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রভাব যে অর্থনীতিতে পড়েছে তা এখন আরও দৃশ্যমান হচ্ছে। একদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে অন্যদিকে রফতানি বাণিজ্যের আয়ও কমেছে। ফলে দেশে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। বৈধ চ্যানেলে অর্থাৎ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা কমেছে। ফলে ব্যাংগুলোতে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে বৈদেশিক বাণিজ্য অর্থাৎ এলসি খুলতেও ডলার সংকট তৈরি হতে পারে।
এমতাবস্থায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ডলারের দাম বাড়িয়েছে। যদিও আগে থেকে সরকার বৈঠ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে গ্রাহকদের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। এবার মার্কিন ডলারের দাম বাড়িয়ে করা হয়েছে ১১৯ দশমিক ৪০ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর সকল ব্যাংক ডলারের এই মূল্যহার ঘোষণা করে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রবাহ কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই হার ঘোষণা করা হলো।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ এবং সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের বিক্ষোভ অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স প্রবাহকে প্রভাবিত করেছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার ব্যাংকগুলোকে উচ্চ হারে রেমিট্যান্স ডলার কেনার জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে। ফলস্বরূপ, সোমবার একদিনের ব্যবধানে রেমিট্যান্স ডলারের হার ৬০-৭০ বেসিস পয়েন্ট বেড়েছে।
অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রবাসীদের রেমিট্যান্সসহ সব ক্ষেত্রেই দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহত এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের দমন-পীড়ন এক প্রকার সংকটময় পরিস্থিতির অবতারণা করেছে। বিএনপি ও জামায়াত সহ বিরোধী রাজনৈতিক বলয় দীর্ঘদিন থেকে ক্ষমতার বলয়ের বাইরে থাকায় নানা রকম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করে আসছে তারা। দৃশ্যত তাই প্রচারিত হচ্ছে গণমাধ্যমগুলোতে। সরকারের এসবের মোকাবিলায় বিরোধীরা দলমত নির্বিশেষে আহ্বান জানিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে হয়তো রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। তবে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ করেন যাতে তারা বৈধ পথে তাদের রেমিট্যান্স পাঠান। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আপনারা অন্যের কথায় রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে নিজের পরিবার ও দেশের ক্ষতি করবেন না। এতেই প্রতীয়মান হয় সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে বাংলদেশে মাত্র সাত কোটি রেমিট্যান্স এসেছে। যা অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেতই বলা যায়।
একটু গভীরে যদি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এসব সংকটের পিছনে আসলে রাজনৈতিক অস্থিরতাই দায়ী। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন মোকাবিলায় সরকার যে দমননীতি গ্রহণ করেছে তা ছিল মারাত্মক ভুল। কারণ সম্পদের হানি হয়তো কাটিয়ে ওঠা যাবে, কিন্তু হাজার কোটি টাকার বিনিময়েও একটি প্রাণ ফেরানো যাবে না। দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এখন পর্যন্ত দেশে প্রায় ২৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করছেন বিভিন্ন মহল। অথচ সাধারণ একটি দাবিকে ঘিরে এই হতাহতের ঘটনাকে উসকে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বা সরকারের নির্বাহী বিভাগ এটি সমাধান করতেই পারতেন। তা না করায় গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলল। গণতান্ত্রিক চর্চার ঘাটতি যে আছে তাও স্পষ্ট হলো। কারণ বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে বিরোধীরা। হত্যাকাণ্ডগুলোর বিষয়ে বিরোধী ও সরকারের মধ্যে দায় চাপানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আর যাই বলা হোক গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের সুবাদে দেশের মানুষ সঠিক চিত্রই দেখেছে। এর উত্তর পেতে হয়তো আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে দেশের কোনো ঘটনার কারণে যে বৈদেশিক শ্রমজাবাজার ক্ষতিগ্রস্ত বা ঝুঁকিতে না পড়ে সেটিও বৃহত্তর বিবেচনায় রাখতে হবে।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে চালানো হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে। বৈশ্বিকভাবে এর প্রভাব যে পড়েছে তা ওসব থেকেই দৃশ্যমান হয়েছে। বিশ্ব সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো মূলত তথ্য-উপাত্তভিত্তিক মন্তব্য করে থাকে। তবে এবার যে ধরণের তথ্য ও চিত্র তারা পেয়েছেন তা খুবই ভয়াবহ। যা মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত পর্যায়ের। সরকার এগুলোকে কিভাবে মোকাবিলা করবে তা এখন দেখার বিষয়। সর্বোপরি দেশের সম্পদ ও দলমত নির্বিশেষ নাগরিকদের সম্পদ, প্রাণ, ইমেজ,যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই কৌশল গ্রহণ করা উচিৎ সরকারের।
এম এ জিসান
মন্তব্য করুন