নাম - ছবি : সংগ্রহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার সুপরিকল্পিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ বানচাল করতে চাচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আজকের সভায় পুলিশ নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ দিয়ে সমাবেশ বাধা দিয়ে জাতীয়তাবাদী দলের গণতন্ত্রের সংগ্রাম দমিয়ে রাখা যাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ জানায়, সুপ্রিম কোর্টে রাষ্ট্রপতির একটি প্রোগ্রাম আছে। তাই তারা নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রসমাবেশ করতে আপত্তি ও বারণ করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, অথচ এক মাস আগে সমাবেশের জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। পুলিশও অনুমিত দিয়েছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আবার প্রমাণ হলো, এই সরকারের আমলে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, অনুমোদনকৃত অনুষ্ঠান বন্ধ করার চেষ্টা ও গড়িমসি করা গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার শামিল।’
উল্লেখ্য, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ২টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে যারা সরকারে আছে তারা কেউ ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তাই তারা সামনে যে নির্বাচন আসছে তাতে বিরোধীদল অংশগ্রহণ করুক তা চায় না। কারণ বিভিন্ন জরিপে এসে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীনরা জয়ী হতে পারবে না। তাদের আসল উদ্দেশ্য বিএনপি যে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে। এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন যাতে না হয় সেজন্য গ্রাইন্ড তৈরি করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করি না। খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশে কোন নির্বাচন হবে না। তাই আমরা বলে আসছি সংলাপ আলাপ আলোচনার পরিবেশ তৈরি করুন। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন। কারণ খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে এদেশে কোন নির্বাচন হবে না। দেশে কোথাও স্বস্তি শান্তি নিরাপত্তা নেই।’
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নির্বাচনকালীন সরকার জনগণের অধিকার প্রয়োগে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।’
মন্ত্রিপরিষদের রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা তাদের হেডেক (মাথাব্যথা)। মাই হেডেক না। আমার হেডেক আমি রাজনীতি করতে পারছি না। কথা বলার স্বাধীনতা পাচ্ছি না। শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিটি সরকার এ কাজটি করে। তারা মনে কর কিছু রদবদল করলেই ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে।’
বিএনপির কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা প্রমুখ।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন এলাকায় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া অবস্থান নিয়েছে শাহবাগ-মৎসভবন সহ আশেপাশের এলাকায়।
উল্লেখ্য, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল ১ জানুয়ারি। ১৯৭৯ সালে কেন্দ্রীয়ভাবে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান।
স্টাফ রিপোর্টার: