নাম - ছবি : সংগ্রহীত
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীরা এ বছর অন্তত অর্ধ লাখ শিশুর জন্ম দেবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। এসব নবজাতক নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সংস্থাটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া গর্ভবতী নারীদের ওপর পর্যবেক্ষণ শেষে গতকাল শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৮ সালের মধ্যে ক্যাম্পেই রোহিঙ্গা নারীরা অন্তত অর্ধ লাখ সন্তান জন্ম দেবে। প্রতিদিন সন্তান জন্মের এই সংখ্যা হবে অন্তত ১৩০ জন। এসব শিশুর অনেকেই পাঁচ বছর বয়সের আগেই মারাও যেতে পারে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের মিডিয়া ম্যানেজার ইভান শারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে ২০১৮ সালের মধ্যে ৪৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নেবে, এমনটা ধারণা করছি আমরা। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানুষ এমনিতেই গাদাগাদি করে থাকছে।’
সেভ দ্য চিলড্রেনের আশঙ্কা, এই অবস্থায় যেসব শিশু জন্ম নেবে তাদের অনেকেই পাঁচ বছর বয়সের আগেই মারা যেতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মের পর থেকেই এসব ক্যাম্পে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকবে। পুষ্টিকর খাবারের অভাব এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে ডায়রিয়া-কলেরার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।
ইভান শারম্যান আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত। কেননা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ একইসঙ্গে পুষ্টিকর খাবারের অভাব এবং কলেরা-ডায়রিয়ার মতো রোগের প্রকোপ এখানে বেশি। যা নবজাতকের জন্য ক্ষতিকর।’
মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে গত ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। যার মধ্যে ৬০ ভাগই শিশু। এর মধ্যে আড়াই হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি আরো কিছু সাহায্য সংস্থা ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকাদানের ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানামারে ফেরাতে দুই দেশের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
স্টাফ রিপোর্টার: