ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে দেশকে শ্মশানের বাংলায় পরিণত করেছিল। ঘরে ঘরে অশ্রু আর রক্ত ঝরিয়েছিল। বিগত সাড়ে ১৫ বছর যুলুমের তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছিল। কিন্তু আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের আয়োজিত এক বিশাল কর্মীসভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোরআন সুন্নাহভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে চাই। আমরা সরকারে এলে একটা যুবকের হাতকেও বেকার থাকতে দিব না। সব যুবকের হাতে কাজ তুলে দিব। এদেশের সকল যুবক গর্বিত যুবক হবে। কেউ সমাজে অবহেলিত থাকবে না। আমরা নৈতিকতা -সম্পন্ন দক্ষ নারী-পুরুষ গড়ে তুলব।
তিনি যুব সমাজকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে আন্দলন তারা তা সফল করেছে। তিনি যুব সমাজকে উদ্দেশে বলেন, তোমরা দায়িত্ব নিয়ে দেশকে গড়ে তোল। কল্যাণের বার্তা নিয়ে রাসূল সা:-এর আদর্শের বার্তা নিয়ে ত্যাগ নিয়ে এগিয়ে এসো।
তিনি আরো বলেন, জনাব ওবাইদুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে দেশে পাঁচ লাখ মানুষ হত্যার শিকার হবে। কিন্ত তা হয়নি। অথচ তারা তা চেয়েছিল এবং ষড়যন্ত্র করেছিল দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাবার জন্যে। যাতে সে সুযোগে বিদেশীরা দেশে ঢুকে পড়ে। তারা সমাজকে অস্থীর করতে চেয়েছিল। এখনো সেই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিন্তু পরিবর্তন আল্লার রহমত। কোথাও আমরা জামায়াত কর্মীরা চাদাবাজি করেনি। তিনি পবিত্র কোরআনের আয়াত উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহর সাহায্য আমাদের জন্যে যথেষ্ট। বর্তমান সরকারকে বলব কাউকে একগুয়েমী করতে দেয়া হবে না। সঠিক পথে চললে সার্বিক সহযোগিতা করব। দায়িত্বশীল আচরণ করব। অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে, যারা বলত এই দেশ আমার বাবা-দাদার, পালাব না, কিন্তু তারা তাদের কথা রাখতে পারেনি। দেশ ও নেতাকর্মী ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে সঠিক বিচার করতে হবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আলেমদের ওপর অত্যাচার হয়েছে অনুভব করেছি কিন্তু কিছুই করতে পারেনি। চোখের পানিতে ও রক্তে সাগর তৈরি হয়েছে। তিনি আভিযোগ করেন, আদালতে ন্যায় বিচার ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ১১ জন নেতাকে ক্যাঙ্গারু কোট বসিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ২০১৭ সালের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুজন শহীদের বাসায় এসেছিলাম। একজনের বাসায় ১৫ মিনিট ও শহীদ ইবনুল পারভেজের বাসায় ঢোকামাত্র জেলা ছেড়ে চলে যাবার জন্যে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তিনি এক শহীদ শিশু সন্তানকে আবেগে জড়িয়ে ধরেন। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল এ অবস্থা ছিল। আমাদের সবকার্যালয় তালা দিয়ে সিলগালা করে দেয়া হয়। নেতাদের নামে মামলা দেয়া হয়, সাতক্ষীরা জেলায় বুলডোজার দিয়ে বাসাবাড়ি গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দলের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়। আবার মাত্র চার দিনের মাথায় তারা বিতাড়িত হয়েছে। আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না। আমরা মামলা করব, আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার চাইব। বিচার পাব কি না জানি না।
তিনি আরো বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হবে বলে অভিযোগ। কিন্তু রাসূল সা:-এর আদর্শ অনুযায়ী সমাজ উন্নয়নে ইজ্জতের সাথে নারীরা ভুমিকা পালন করতে পারবে। আমরা দায়িত্ব পেলে নারীদের মর্যদা দিব, স্ব স্ব মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করব।
বিগত সরকারের দুর্নীতির কথ উল্লেখ করে বলেন, তারা দুর্নীতির মাধ্যমে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশ ধ্বংস করেছে। আমরা দায়িত্ব পেলে দুর্বৃত্তরা ঘুষ ও দুবৃত্তায়নের দুঃসাহস দেখাবে না, ছলচাতুরী করতে দেয়া হবে না। ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা হবে।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যপক আলী আযম মো: আবু বকরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হুসাইন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মওলানা আজিজুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যপক আব্দুল আওয়াল, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মনিরুজ্জামানসহ জেলা ও উপজেলা জমায়াত নেতরা।
এনএনবিডি ডেস্ক