সংগৃহীত ছবি
ফেসবুক মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। এতে মানুষের রুচিবোধ, ইচ্ছা, আভিলাস, দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড, কর্মপরিকল্পনা এবং অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কেউ আবেগের, কেউ বাস্তবতার কথা লিখেন। কেউ করেন বিস্ফোরক মন্তব্য। কারো চেপে রাখা অব্যক্ত কষ্ট লেখনীর মধ্য দিয়ে পাঠকের হৃদয় ভেদ করে মনকে বিষিয়ে দেয়।
কেউ করেন ফানি পোস্ট। আবার কেউ- রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা নিয়ে লিখতে ভালোবাসেন। কারো তীর্যক লেখনী মানুষকে কষ্ট দেয়। অনেকে ফেসবুকে পশরা সাজিয়েছেন নিজের ব্যবসা- বাণিজ্যের। এ সবকিছু মিলিয়ে ফেসবুক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছে।
এখন একজন মানুষকে মূল্যায়ন বা তার সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে আমরা তার প্রোফাইল খুঁজি। পাত্র-পাত্রীদের সম্পর্কে ধারণা লাভ করতেও ফেসবুকে ঢু মারেন অভিভাবকবৃন্দ।
কারো প্রোফাইলে গিয়ে ৬ মাস, ১ বছর ঘুরলেই তার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা যাবে যে তিনি কোন্ রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। বা স্বীয় ধর্ম, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইত্যাদিও জানা যাবে প্রোফাইল ঘুরে।
সবকিছু ছাপিয়ে ফেসবুক তার ইউজারদের ব্যক্তিত্ত্ব খুব স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলে। চিন্তার ধরণ-প্রকৃতি, চিন্তার স্থিরতা ও দূরদৃষ্টি, আবেগের নিয়ন্ত্রিত প্রকাশ বা মাত্রাতিরিক্ত প্রকাশ ইত্যাদি ম্যাজার করে সহজেই একজন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্ত্ব নিরূপণ করা যাবে।
ফেসবুকে ১ দিনে ইউজার কয়টা পোস্ট দিচ্ছেন, কতটা সময় দেন, পরিবার-সন্তানদের ছবি নিয়মিত দেন কি-না, খাবারের ছবি দেন কি-না, খালি গায়ে বা হালকা পোশাক পরে ছবি দেন কি-না, তার লেখনীতে ভাষার ব্যবহার কোন্ পর্যায়ে, না-কি গালি-গালাজ এবং অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ বা ইঙ্গিত বেশী করেন ইত্যাদি ইত্যাদি ইন্ডিকেটরগুলো ইউজারের স্মার্ট ব্যক্তিত্ত্ব বা ব্যক্তিত্ত্বহীনতার পরিচয় বহন করে।
ইউজার হয়তো জানেন যে কতজন তাকে ফলো করছে, কিন্তু তিনি জানেন না যে, কে কে তাকে অনুসরণ করছে। তাই সাবধানতা জরুরী। আসুন, ফেসবুক ব্যবহারের মাধ্যমে নিজ এবং নিজ পরিবারকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখি, উন্নত রুচিবোধ সৃষ্টি করি। পাশাপাশি ভালো এবং উত্তম দিয়ে নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যাই।
এইচ এম জোবায়ের