ছবি: সংগৃহীত।
৫ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মাধ্যমে হোয়াইট হাউজে নিজের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে যাচ্ছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর কাকে কী বানাবেন, তার ফর্দ এখন তৈরি করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যে নিজের মতো করে প্রশাসন সাজাচ্ছেন তিনি। আর সেই প্রশাসনে নিজের অনুগত, মুসলিম ও চীনবিদ্বেষী এবং বিতর্কিতদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্রগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রাম্প পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে মার্কো রুবিওকে ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মনোনয়ন দিয়েছেনস মাইকেল ওয়ালটজকে। সিনেটর রুবিও এবং প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ওয়ালটজ দুজনই চীনের কড়া সমালোচক হিসাবে পরিচিত।
ফ্লোরিডার সিনেটর রুবিও ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকার সবচেয়ে আগ্রাসী প্রার্থী। বিগত বছরগুলোতে তিনি চীন, ইরান ও কিউবাসহ আমেরিকার ভূ-রাজনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক পররাষ্ট্র নীতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
ওয়ালটজ একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান এবং ট্রাম্পের অনুগত, যিনি কর্নেল হিসেবে ন্যাশনাল গার্ডে দায়িত্ব পালন করেছিলে। তিনি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের কার্যকলাপের কড়া সমালোচনা করেছেন এবং ওই অঞ্চলে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
ট্রাম্প স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিতে চলেছেন দক্ষিণ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নয়েমকে। তিনিও কট্টর চীনবিরোধী বলে পরিচিত।
ট্রাম্প সাবেক ডেমোক্রেট নেতা ও মুসলিমবিদ্বেষী তুলসি গ্যাবার্ডকে তার জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক মনোনীত করেছেন। তবে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে তুলসির কিছু দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে ট্রাম্পের দলের মধ্যেও তার নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। ৪৩ বছর বয়সী তুলসি গ্যাবার্ড যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের প্রথম হিন্দু সদস্য। তিনি আমেরিকান সামোয়া অঞ্চলে জন্মগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নাগরিক হিসেবেও কংগ্রেস সদস্য হন। দেশটির সেনাবাহিনীতেও কাজ করেছেন তুলসি গ্যাবার্ড।
একনজরে ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা স্থান পেয়েছেন
জেডি ভ্যান্স
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের এই যাত্রায় তার গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন ৪০ বছর বয়সী সিনেটর জেডি ভ্যান্স। তিনি দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
জেডি ভ্যান্স কয়েক বছর আগে ইসরায়েলপন্থী ধনকুবের পিটার থিয়েলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মূলত তখন থেকেই তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার প্রস্ফুটিত হতে শুরু করে।
সিআইএ সমর্থিত অ্যানালিটিক্স ফার্ম প্যালানটিয়ার টেকনোলজিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা থিয়েল। ওই প্রতিষ্ঠান গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইসরায়েলপন্থী থিয়েল জেডি ভ্যান্সের সিনেট প্রচারণায় ১৫ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছিলেন। ভ্যান্স কৌশলগতভাবে ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' বৈদেশিক নীতি প্রচার করেন।
ভ্যান্সের সঙ্গে ভারতীয় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সবচেয়ে বেশি। তার স্ত্রী ঊষা চিলুকুরি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ২০১৩ সালে ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন তাদের পরিচয় হয়। ২০১৪ সালে বিয়ে করেন এই যুগল। এরপর থেকে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে তার ভারতীয় স্ত্রীর
মার্কো রুবিও
মার্কো রুবিও ট্রাম্প প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কাজ করবেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার লড়াই জোরালো হওয়ার মধ্যে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক হিসেবে ফ্লোরিডার এ সিনেটরকে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প।
কিউবান অভিবাসী বাবা–মায়ের সন্তান রুবিও ইসরায়েলের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
ইলন মাস্ক
নতুন ‘সরকারি দক্ষতা’বিষয়ক বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইলন মাস্ককে। তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ও ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের একজন। টেসলা ও এক্সের স্বত্বাধিকারী মাস্কের সঙ্গে কাজ করবেন ট্রাম্পের আরেক ধনাঢ্য সহযোগী বিবেক রামাস্বামী।
মাস্ক বলেছেন, তার লক্ষ্য ফেডারেল সরকারের ৭ ট্রিলিয়ন (৭ লাখ কোটি) ডলারের বাজেট থেকে ২ ট্রিলিয়ন (২ লাখ কোটি) ডলারের ব্যয় হ্রাস করবেন। তবে তা কীভাবে সম্ভব, সেটি ব্যাখ্যা করেননি তিনি।
বিবেক রামাস্বামী
ইলন মাস্কের নেতৃত্বে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ বা সরকারি দক্ষতা দপ্তর নামে একটি নতুন বিভাগ খোলা হবে ট্রাম্প প্রশাসনে। এটি এমন একটি দপ্তর হবে যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে কাজ করবে।
দপ্তরটির পরিচালনায় মাস্কের সহযোগী হিসাবে থাকবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতের একজন উদ্যোক্তা, অধিকারকর্মী ও বিনিয়োগকারী।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। তবে প্রাথমিক বাছাইয়ে হেরে ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ান বিবেক। এতে তিনি ট্রাম্পের পছন্দের তালিকায় চলে আসেন।
ট্রাম্প বলেন, মাস্কের নেতৃত্বে সৃষ্ট নতুন বিভাগটি হোয়াইট হাউস এবং অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের সঙ্গে কাজ করবে। এর কাজ হবে সরকারি খরচ কমানোর জন্য ‘বড় আকারের কাঠামোগত সংস্কার চালানো এবং উদ্যোক্তা অ্যাপ্রোচ তৈরি করা’, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
পিট হেগসেথ
পিট হেগসেথ পেয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের উপস্থাপক ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ডের সাবেক এ সদস্য বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দেবেন।
ট্রাম্পের প্রিয় সংবাদ নেটওয়ার্ক ফক্স নিউজে ২০১৪ সালে যোগ দেন হেগসেথ। সপ্তাহান্তের একটি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে থাকেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের প্রায় ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন কর্মীকে সামলাতে হবে তাঁকে।
আর এফ কে জুনিয়র
রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র (৭০) পেয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন তিনি। খ্যাতিমান এ মার্কিন রাজনীতিককে নিয়ে রয়েছে বিতর্কও। করোনাভাইরাসের টিকার বিরোধিতা করে এ নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বও প্রচার করেছেন আর এফ কে জুনিয়র। তিনি অপ্রমাণিত এ ধারণা ছড়িয়েছেন যে শৈশবে টিকা প্রতিবন্ধিত্ব ডেকে আনতে পারে। করোনার টিকাকে প্রাণঘাতী বলেও দাবি করেছেন তিনি।
মাইকেল ওয়ালটজ
ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয়েছেন মাইকেল ওয়ালটজ। কংগ্রেস সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সের সাবেক এ কর্মকর্তা ভবিষ্যতে হোয়াইট হাউসের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। ওয়ালটজ চীন ও রাশিয়াবিরোধী হলেও ইউক্রেনে মার্কিন সমর্থন কমিয়ে আনার পক্ষপাতি।
ডগ বারগাম
ডগ বারগাম (৬৮) হচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার বলেন, নর্থ ডাকোটার গভর্নর বারগামকে তিনি এ পদের দায়িত্ব দিচ্ছেন। সম্পদশালী বারগাম সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের একজন সাবেক নির্বাহী।
বারগাম নিজেকে একজন প্রথাগত ব্যবসায়িক মনমানসিকতার রক্ষণশীল ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে একসময় রিপাবলিকান পার্টি থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তিনি। পরে অবশ্য মনোনয়নের দৌড় থেকে তিনি নিজেকে সরিয়ে নেন ও ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করেন।
ওপরে বাম থেকে প্রথম পিট হেগসেথ, দ্বিতীয় তুলসী গ্যাবার্ড, নিচে বাম থেকে প্রথম ম্যাট গেটজ এবং দ্বিতীয় রবার্ট কেনেডি জুনিয়র
ওপরে বাম থেকে প্রথম পিট হেগসেথ, দ্বিতীয় তুলসী গ্যাবার্ড, নিচে বাম থেকে প্রথম ম্যাট গেটজ এবং দ্বিতীয় রবার্ট কেনেডি জুনিয়রছবি: এএফপি
জন র্যাটক্লিফ
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক পদে বসছেন জন র্যাটক্লিফ। ট্রাম্পের প্রথম দফার প্রেসিডেন্ট মেয়াদে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ছিলেন তিনি।
তুলসী গ্যাবার্ড
মুসলিমবিদ্বেষী তুলসী গ্যাবার্ডকে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক হিসেবে বাছাই করেছেন ট্রাম্প। গ্যাবার্ড হাওয়াই থেকে নির্বাচিত সাবেক কংগ্রেস সদস্য। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে দ্বিতীয় মেয়াদে সমর্থন দিতে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ ত্যাগ করেছিলেন গ্যাবার্ড।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক হিসেবে গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় রক্ষার কাজ করতে হবে।
ম্যাট গেৎস
ট্রাম্প প্রশাসনে অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করবেন ম্যাট গেৎস। কট্টর এ রিপাবলিকান নেতার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আছে। নারী পাচারের অভিযোগে কয়েক বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলেছে। গেৎস অবশ্য নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়নি।
ক্রিস্টি নোয়েম
ট্রাম্পের প্রশাসনে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েম।
নোয়েম ট্রাম্পের রানিং মেট (ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী) হতে পারেন বলে নির্বাচনের আগে আলোচনা ছিল। ২০২২ সালের নির্বাচনে বড় জয় নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে সাউথ ডাকোটার গভর্নর নির্বাচিত হন ক্রিস্টি। করোনা মহামারির সময় নিজের অঙ্গরাজ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতা করে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনায় আসেন।
নতুন দায়িত্বে নোয়েম ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতি কার্যকর করা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসী বিতাড়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত এপ্রিলে প্রকাশিত স্মৃতিচারণামূলক এক বইয়ে ক্রিস্টি লেখেন, নিজের বাড়িতে ‘অবাধ্য’ একটি কুকুরকে গুলি করেন তিনি। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
টম হোম্যান
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ অভিবাসন কর্মকর্তা টম হোম্যান। জানুয়ারিতে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে তাঁর প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা হিসেবে হোম্যান দেশটির সীমান্ত দেখভাল করবেন। নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত রোববার ঘোষণা দেন, হোম্যান হবেন তাঁর দ্বিতীয় দফার প্রশাসনের ‘সীমান্ত জার’।
এলিস স্টেফানিক
এলিস স্টেফানিক ২০১৪ সালে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩০ বছর। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আর কোনো নারী এত কম বয়সে আইনসভার সদস্য হননি। ডোনাল্ড ট্রাম্প স্টেফানিককে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। স্টেফানিক নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য এবং ট্রাম্প ও ইসরায়েলের পক্ষে সোচ্চার কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত।
মাইক হাকাবি
ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব পেয়েছেন মাইক হাকাবি। তাঁকে নিয়ে ট্রাম্পের করা একটি মন্তব্য হলো, ‘আরকানসাসের সাবেক এই গভর্নর একজন খ্রিষ্টান যাজক থেকে রাজনীতিবিদ হয়েছেন। তিনি ইসরায়েল ও ইসরায়েলের জনগণকে ভালোবাসেন। একইভাবে ইসরায়েলের জনগণও তাঁকে ভালোবাসেন।’
ক্যারোলিন লেভিট
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দাপ্তরিক বাসভবন হোয়াইট হাউসের নতুন প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে ক্যারোলিন লেভিটকে বেছে নিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই পদে যোগ দেবেন লেভিট। ক্যারোলিন লেভিটের বয়স মাত্র ২৭ বছর এবং এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে হোয়াইট হাউসের সর্বকনিষ্ঠ প্রেস সেক্রেটারি হতে চলেছেন তিনি।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি তার পরবর্তী প্রশাসনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি হিসাবে কাজ করার জন্য তার প্রচারণা শিবিরের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটকে দায়িত্ব দেবেন। আর এর ফলে ২৭ বছর বয়সী লেভিট হবেন মার্কিন ইতিহাসে হোয়াইট হাউসের সর্বকনিষ্ঠ প্রেস সেক্রেটারি।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে— কংগ্রেসের এক সময়ের এই প্রার্থী, যিনি ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনেও হোয়াইট হাউসের প্রেস অফিসে কাজ করেছিলেন, তিনি “মঞ্চে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবেন এবং আমেরিকান জনগণের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছে দিতে সহায়তা করবেন। আমেরিকাকে আবার মহান করুন”।
ট্রাম্প আরও বলেন, “ক্যারোলিন স্মার্ট, দৃঢ় এবং একজন অত্যন্ত কার্যকর যোগাযোগকারী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছেন”।
অন্যান্য
ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও রয়েছেন সাবেক কংগ্রেস সদস্য লি জেলডিন (পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা), ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের ব্যবস্থাপক সুসি ওয়াইলস (হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ), জর্জিয়ার সাবেক কংগ্রেস সদস্য ও ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ডগ কলিন্স (ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি)।
সরদার একরাম