news-details

সিইসি ও কমিশনার পদে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম প্রস্তাব সার্চ কমিটির

ফাইল ছবি


ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠন হতে যাচ্ছে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য কমিশনার পদে বিকল্প প্রস্তাব রেখে মোট ১০ জনের নামের তালিকা দিয়েছে সার্চ কমিটি। ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গতকাল বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত্ করে এই তালিকা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ‘কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠন হবে’। ধারণা করা হচ্ছে, দুই-তিন দিনের মধ্যেই নতুন ইসি গঠন করতে পারেন রাষ্ট্রপতি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর এই সার্চ কমিটি সভাপতি। সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম।

নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ১৭টি দল-জোট নাম প্রস্তাব করেছিল সার্চ কমিটির কাছে। এরমধ্যে সিইসি পদের জন্য বিএনপি সাবেক সচিব শফিকুল ইসলাম এবং এএমএম নাসির উদ্দিনের নাম প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে। বিএনপির সমমনা কয়েকটি দল-জোটের প্রস্তাবিত তালিকায়ও সিইসি পদে সাবেক এই দুই সচিবের নাম ছিল। অবশ্য বিএনপির যুগপত আন্দোলনের সঙ্গী বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ কারো কারো প্রস্তাবে সিইসি হিসেবে নাম ছিল আরেক সাবেক সচিব আবু আলম শহিদ খানের।

জানা গেছে, চারজন নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য বিএনপি আটজনের নাম প্রস্তাব করেছে সার্চ কমিটির কাছে। প্রতিটি পদের জন্য দুটি করে নাম দিয়েছে দলটি। অন্যদিকে, সিইসি ও চারজন কমিশনার পদের জন্য আটজনের নাম প্রস্তাব করেছিল জামায়াতে ইসলামী। চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট ও এলডিপি পৃথকভাবে নাম প্রস্তাব করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত সার্চ কমিটি ৭ নভেম্বরের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে নাম প্রস্তাব করার জন্য রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছিল। পেশাজীবী সংগঠনসহ ব্যক্তি পর্যায় থেকেও নাম প্রস্তাবের সুযোগ ছিল। তবে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও দলটির মিত্র দলগুলো, জাতীয় পার্টি (জাপা) এবং ‘ফ্যাসিবাদের’ সহযোগী দলগুলোর কাছে কোনো নাম চায়নি সার্চ কমিটি।

নতুন সিইসি পদের জন্য বিএনপি যে দুজন সাবেক সচিবের নাম প্রস্তাব করেছে, তাদের মধ্যে ৭৬ বছর বয়সী শফিকুল ইসলাম অনেক আগেই অবসরে গেছেন। আর এএমএম নাসির উদ্দিন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি অবসরে যান। বিএনপির যুগপত্ আন্দোলনের সঙ্গী কয়েকটি দলও সিইসি পদে সাবেক সচিব শফিকুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করেছে।

জানা গেছে, গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক ছয়টি দলের পাঠানো পৃথক তালিকায়ও সাবেক সচিব শফিকুল ইসলামের নাম ছিল। পাশাপাশি মহিবুল হকের নাম প্রস্তাব করেছে মঞ্চের কোনো কোনো শরিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন অধ্যাপকসহ মোট ছয়জনের নাম প্রস্তাব করেছিল। দলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুমের নাম প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে।

নামের প্রস্তাব দাখিলকারী দল-জোটগুলোর পৃথক পৃথক সূত্র জানিয়েছিল, নতুন নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, সাবেক সেনা কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার ইকতিদার আহমেদের নামও ছিল কারও কারও তালিকায়। এছাড়াও ছিল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম হাসান তালুকদার, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী; সাবেক যুগ্মসচিব তাহমিদা আহমেদ, ড. এ ওয়াই এম একরামুল হক ও মুনির চৌধুরী নামও। উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর সার্চ কমিটি গঠন করে বলা হয়েছে- ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বাছাই করা নামের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া হবে।


এনএনবিডি ডেস্ক